আর সব্বাই বুড়ি বলে, সোহম ডাকে বুড়ি-মা । এক-ঘন্টা কুড়ি মিনিট, দিনই এই এক যাত্রা শহরের পথে, পথ অনেকখানা । সাত-সকালে সদরে এসে পৌঁছয় যখন তখনও শহর পুরোপরি প্রস্তুত নয় তাকে জল খাবার এগিয়ে দিতে। খরচটাও ভাবতে হয় যেমন, তেমনি ভাতের কারণে মৌ-কে সকালটা বিরক্ত করতে মন চায় না সোহমের । আগের রাতের খান চারেক রুটি আর নিজের তৈরী এক কাপ চা একটু বেশী চিনি দেওয়া, এতটা পথ দিব্যি পেরিয়ে যায় দিনের পর দিন, বছরের পর বছর । এই এক চাকরীতেই ফেলে রেখেছে নিজেকে, বিয়ে করে মৌ-সঙ্গ, অনেকটা সাংসারিক করেছে তাকে ।
সংসার। চার অক্ষর রক্ষা করছে সব কিছু , তাকে রক্ষা করার দায়িত্বে, সকালের শিফট্ সেরে বিকেল চারটেয় বাড়ি ফিরে আসা। বসিরহাট-গাদিয়াড়া,হাওড়া ছেড়ে পৌনে-তিনটে নাগাদ বাসটা সোহমকে তোলে, সপ্তাহের রবিবার বাদে সবদিন। টু বাই টু সীটের আধখানা সীট খালি আসে ওর জন্য, বাকি আধখানায় আর সব্বার 'বুড়ি', হাওড়া থেকেই । ইচ্ছে থাকলেও উপায় নেই, বার-বার ঘুমিয়ে পড়া পাশের যাত্রীকে ডেকে তুলতে হয়, " ও বুড়ি-মা ! বুড়িমা সোজা হয়ে ঘুমাও আর নয়ত আমার সাথে বাজারের গল্প কর।" বাজারের গল্প অনেক জানা হয়ে গেছে এই মানুষটার জন্য। আসল গল্পতো এইটাই, রোজগার করা মানুষের জীবনে। কিছুটা হলেও এই ভিত্তিতে মৌ এর সামনে রোজকার বাজার নিয়ে গিয়ে ফেলে। 'কত কথার প্রানের বন্ধু , বাস-টাইমের বিচ্ছেদ পাকা'। প্রথম প্রথম মাথায় ঢুকত না এই সব কথা, ধীরে ধীরে বাস-কথার সাথে পরিচিতি হতে থাকে সোহম। খালি বাসে জোর গলায় গল্প জোড়ে সবাই রাজনীতি , সংস্কৃতি , খেলা , সিনেমা আর কে কাকে গ্রীন সিগন্যাল দিচ্ছে না বউকে ঘরে তোলার জন্য । বর্তমান প্রজন্মের ভবিষ্যৎ চর্চা ।
আজ বাস চলছে বেশ জোরে । অন্যদের গল্পের ফাঁকেই বুড়িমা সোহমের কাছে জানতে চাইল, " আমার নাতি গুলোর কি হবে বলত ? "
" কত বড় হল তোমার নাতি বুড়িমা ? আর কটা ? "
" তিন-তিনটে ! "
" বয়স কত ? "
" বড়টা পাঁচ বছর। । "
" তাহলে তোমার আর চিন্তা কি ? বেশীদিন আর তোমায় কষ্ট করতে হবে না । "
" সে-দিন এখনো অনেক দেরী ! আমার শরীরও আর চলতে চায় না , চালাই অনেক কষ্টে , তোমাদের মত একটা কাজ থাকলে....... "
" বল কি বুড়িমা ! কাজ করবে ? "
" করছি না ? রোজ পাইকারী বাজারের মাল কিনে বেচছি । "
" এটার নাম ব্যবসা , কাজ নয় । আর করছ বলেই এতটা ভাল আছ । "
বাসটা সজোরে ব্রেক কষতে কষতে, এদিক-ওদিক সামলে ঝাঁকুনি দিয়ে কোনরকমে পাশ কাটাল আগের লরীটাকে । কাজ করা শরীর বুড়িমার । যতদিন দেখছে, সোহমের চোখে এক আছে। কে যে ঈর্ষা করে বুড়ি ডাকটা বসিয়ে দিয়েছিল আর সবার মুখে, মাঝে মাঝে প্রশ্ন আসে মনে । এ মানুষগুলোর শরীর পুরোন হয় মাত্র, জমির যেমন বয়স বাড়ে না । যুগ-যুগ ধরে ফসল ফলে তাতে, সেই আনাজ-পাতি বুড়িমার জীবন, যৌবনও । হাত ঘুরে সোহমদের রান্নাঘরে । রাজকার্যেরও প্রথম প্রায়োরিটি এই বিষয়। প্রান্তিক চাষীর কর্মের প্রতিফলন প্রত্যেকের জীবনে। জীবন ধারণের প্রথম শর্তও। অজানা সাহায্য সাধ্যের মধ্যেই সাত-সকাল থেকে সকলের নাগালে । দায়বদ্ধতা থেকেই প্রত্যেকে দৌড়চ্ছে , কেউ এর বাইরে নয়, এমনকি বুড়িমা । ব্যবসা , কাজ এ সব শব্দ এই সব মানুষগুলোকে যে খুব ভাবায় তা নয় । দৌড়তে হয় বলা ভাল, সোহমেরও বাকি ভবিষ্যৎ দৌড়ের ভবিতব্যে বাঁধা। কাজ না থাকলে তাও সম্ভব নয় । ব্যবসা মানে তো আরও ব্যস্ততা । আর্শীদবাদ হয়ে নেমে আসুক সবার মাঝে , এই সুর ।
কাজে কামাই সোহমের হলেও হয়, কিন্তু বুড়িমার অভিধানে এ শব্দ নেই, সম্ভব হয় কি করে ? এটাই ভাবে সে, যখন প্রবীন এই মানুষটা প্রশ্ন করে , " কাল কাজে এলে না ? " এনাদের মত মানুষদের আগে কাজ পাওয়া উচিৎ, হয়ত তাই ব্যবসা শব্দের জন্মও হয়েছে, কাজ করা খেটে খাওয়া মানুষের মুখ সাথে করে বাস-ট্রেন-ট্রাম আর রাজযজ্ঞ দৌড়চ্ছে । থেমে যাওয়া মানে সব থেমে যাওয়া, দায়বদ্ধতা বাড়ুক আগামীদিনগুলোর জন্য, বড় প্রয়োজন । সোহমকে ভাবায় এসব, ভাবাচ্ছিলও এতক্ষণ, বাসটা থেমে যাওয়াতে টনক নড়ল তার , তারসাথে বুড়িমার গলার আওয়াজ, " একবার উঠে দাঁড়াও, আমাকে পেরোতে দাও, নামতে হবে । " বুড়ির জন্য কয়েক সেকেন্ড বেশী লাগবে সবার জানা এ কথা । আর পাঁচ-সাতটা স্টপেজের পরেই সোহম বাবুর নামার পালা। এইভাবেই প্রতিদিনের পালা চলে, বাস-টাইমে বিচ্ছেদ পাক্কা ।
নিজে থেকেই শরীরের কথা জানাল বুড়িমা। তাহলে কি তারও পাকাপাকি ভাবে বিচ্ছেদ পাকা ? পাশে অন্য কেউ বসবে ? দূরছাই এ কি সব ভাবছে সে ! আর বুড়িমার চলবেই বা কি করে ? তার সংসারের সব খবর তার জানাও নয়, এটা এই কম বয়সে বোঝে অতি স্বচ্ছলতায় এতটা স্বচ্ছ দৃষ্টি থাকে না, ধারে-পাশে ঘোরা স্বচ্ছলতার মায়া রঙীন আবীর ছুঁড়ে দেয় , এ কিন্তু তার বন্ধন, আর সেই বন্ধনীর ভেতর প্রথম কথা সবজী মান্ডি, দ্বিতীয় সংসার। মিহিরের গলার আওয়াজে বাস ছেড়ে দিয়েছে বুড়িমাকে নামিয়ে, সামনে আসতে চলেছে সোহমের নামার স্টপেজ। এতসত মনে ঘুরপাক খেত না, ল্যাবের জুনিয়র আজই রিসাইন লেটার ধরাল শারীরিক কারণে। এ ভবিষ্যৎও জানা দরকার , প্রবীন মানুষটা কত কথার বন্ধু যে। এই বিচ্ছেদে সে রাজী, বুড়িমার সাথে সবজী মান্ডির, একটু বসতে পাবে মানুষটা । একান্ত দরকার এটা , আর যেটা দরকার আগামীকাল বুড়িমার সংসারের খবর নেওয়ার । বসে গেলে তার বাকী দিনগুলো চলবে কি করে ?
#
কোন কোনদিন দেরী করে , আজ ঠিক সেই কান্ডই ঘটাচ্ছে বাসটা , মিনিট কুড়ি-পঁচিশ দাঁড়িয়ে আছে সোহম , এখনও অবধি দেখা নেই বাসের । কথা শুরু করে কথা শেষও করতে চায় , বুড়িমার বাকি জীবনটায় নিশ্চয়তা কতটা সেটাও একবার নবীন এই বন্ধুর জানা দরকার । নাতি তিনটের ভবিষ্যৎ ? এও এক প্রশ্ন । মুখরোচক গল্পে দিনগুলো পেরিয়ে যায় , বাসের ভেতর কম পরিচিত মুখ নেই! কিন্তু কে কার দুঃখের খবর জানে ? জানাটা কি খুব জরুরী? আজ সকাল থেকেই জরুরী ভিত্তিতে এ তাগিদ অনুভব করেছে সোহম ...... বুড়িমার প্রশ্নে অন্তত , জগৎ উদ্ধার সোহমের কাজ নয় , খবর রাখাটাই আসল কাজ , পরের জনে এই উদাহরণ উদ্ধার সন্ধানে সামান্য সাহায্য হলেও হতে পারে , আগামীদিনে রাজনীতির গল্পে সোহম রাজ করতে পারবে বিপ্লবের ওপর , বুড়িমার দুঃখ , নাতিগুলোর ভবিষ্যৎ আর সোহমের চুলচেরা বিশ্লেষন বিপ্লবের সাথে বিভেদ কমিয়ে রাজনৈতিক প্লার্টফর্মে এক কথা বলবে দুজনা....... শুধুমাত্র ভবিষ্যতের কারণে....... তার পরবর্তী পর্যায় বিপ্লবের হাতে , তাদের রাজকার্যের অন্দরমহলে এ খবর পৌঁছে দেওয়া । নীল-সাদা বাসটা দেখতে দেখতে ঘোলাটে চোখের সামনে নিমেষে কাছে চলে এল , সিঙ্গেল গেটে মিহির পুরো শরীরটাকে বাইরে বার করে দিয়েছে , দশ-হাত দূর থেকেই ডাকছে ," সাঁতরাগাছি-আলমপুর......টেশনে ব্রেকডাউন হয়ে গেছিল দাদা...চাপ চাপ তাড়াতাড়ি চাপ , মেকআপ দিতে হবে । "
একপ্রকার হুড়মুড়িয়েই উঠতে হল সোহমকে । " কোন উপায় ছিল না ? " মৌ জানতে পারলে এই প্রশ্নের সম্মুখীন হতেই হবে । ' নবান্নের ' কাছে নব্বই ডিগ্রি বাঁকে বুড়িমা পাশাপাশি ভাবে পুরো শরীরের ভর নিয়ে সোহমের ওপর এসে পড়ল ।
" আবার ঘুমোচ্ছ ? তাও আবার হাওড়া থেকেই , তোমার কি হয় বলত ! স্প্রে করা সবজীর গ্যসে ঘুম ধরে যায়... ? "
দু-হাত দিয়ে সোহমের ডান হাতটাকে চেপে ধরেছে বুড়িমা, শরীরটাকে জানলার দিকে ঠেস দিতে দিতে বলল, "আজ শরীর ভাল নেইগো। "
" কি ব্যপার বলতো ? কি শুরু করেছ তোমরা ! বাসের শরীর খারাপ , তোমার শরীর খারাপ , হয়েছে কি ? "
" আজকের দিনে আমার ছেলেটা...... মরে । "
" মরে ! মানে তোমার ছেলে মারা গেছে ! কতদিন ? আমাকে বলনি কখনো ! "
" গেল বছর , তুমি দশ-পনের দিন ছুটি নিয়েছিলে তখন । তারপর আমিও ভুলেছি । "
" কি করত ? কি হয়েছিল ? খরচও অনেক হয়ে গেছে ! "
" মদে শেষ করল নিজেকে...... । আজকের দিনে । "
সোহম নিজের দুটো হাত নিয়ে বুড়িমার বাঁ-হাতটা ধরতে বাধ্য হল , কারণ ততক্ষণে তার দুটো চোখের সামনে যে চোখদুটো , তা জলে পরিপূর্ণ , খানিক পরে-পরেই জল উপচে পড়ছে ব্যর্থতা অনিশ্চয়তা দুঃখ-কষ্ট কে সাথে নিয়ে , " কি করবে বল , ভাগ্য বলেই ধরে নাও , তোমার কাজ তুমি করে চলেছ এতেই তোমার শান্তি , কারো কাছে তো আর হাত পাততে হচ্ছে না । "
" কার কাছে হাত পাতব ? "
মায়ের পেটে ধরা একটা জলজ্যান্ত ছেলের এমন পরিনামের পরও তাকে কাজে বেরোতে হচ্ছে , কথাটা ভাবতে ভাবতেই সোহমের চোখ গেল পেয়ারের লোক বংশী ড্রাইভারের সীটের পেছনে রাখা সবজী বস্তাগুলোর দিকে , সেখান থেকে চোখটাকে আবার তুলে আনল বুড়িমার চোখের ওপর , ভাবলেশ হীন বন্ধ চোখ , মাথা পেছন দিকে হেলান । কিন্তু একটা হই-চই কানে আসছে সামনের দিকটা থেকে । বুড়িমাও চোখ খুলতে বাধ্য হল , তবে কোলাহলের জন্য নয় , নিজের নামবার সময় হয়ে গেল তাই । চ্যাঁচামিচির কারণ তেল-পাইপ এ আবার হাওয়া নিয়ে নিয়েছে , আর বাস বুড়িমার স্টপেজে নোঙর করেছে এক ট্যঙ্কি তেল নিয়েও , যতক্ষণ না তেল-পাইপ চেঞ্জ হচ্ছে গাড়ি আর একপাও যাওয়ার নয় বুড়ির বাড়ি ছেড়ে ।
" চলো সবাই আমার বাড়ী , খাওয়া দাওয়া করে আসবে.... । " কেউ বলছে , " ও সব নিরিমিশী-তে ভুলবো না বুড়ি । " আর একদিন যাব সবাই কব্জী ডুবিয়ে খেয়ে আসব । " কে যেন এগিয়ে গিয়ে বুড়িমার মালগুলো নামিয়ে দিচ্ছে । কিছুক্ষণের জন্য সোহম অন্য একটা জগৎ এ প্রবেশ করিয়েছিল নিজেকে...কখন বুড়িমা পেরিয়ে গেছে ওকে পার করে ওর খেয়ালও নেই , বুড়িমার ডাকে মন আর চোখ একসাথে যেন মেলে ধরল । " আজ আমার বাড়ি চল , সংসারের খোঁজ করছিলে , দেখতে যাবে না ! সাজানো সংসার ? "
রোজকার যাত্রাপথে মন অবচেতনে থাকলেও , খুব তাড়াতাড়ি তা আবার সম্বিৎ ফিরে পায় , " আবার ওপরে এত কষ্ট করে উঠে এলে , আমাকে ডাকতে ! "
" এখন আর বাস গড়াচ্ছে না , তুমি যাবে কি করে ? আর আমার বাড়িও বেশীদূর নয় । কবে আমি মরে যাব ? "
বাসের অভাব নেই এ রাস্তায় । এত কথায় কথা বাড়বে । দু-ঘন্টার আগে বাস ছাড়ার আশাও কম । তাহলে আর যেতে অসুবিধা কোথায় ? " চল তোমার বাড়ি একবার ঘুরেই আসি । ভ্যানে দোকানের মাল লোড করে ফেলেছ তো , গিয়ে বস , আমি তোমার বউমাকে একবার জানিয়ে দি । " সোহম ভাবতে লাগল একবার বুড়ি ছোঁয়াওতো হবে ।
বাস স্ট্যন্ড থেকে বেশী দূর নয় বুড়িমার বাড়ী । পথে আসতে আসতে বুড়িমা বলল , " বুড়িদের বাড়ি যাব বললেই যে কোন ভ্যান তোমাকে এ বাড়িতে পৌঁছে দেবে । "
" বাবা বল কি ! এখানেও তোমার নাম বুড়ি । "
টালির চালের বাড়িতে ঢুকতে ঢুকতে বুড়িমা ডাকাডাকি শুরু করে দিল , " বুড়ি , বুড়ি কোথায় রে তুই ? দেখ কে এসেছে , আমার বন্ধু এসেছে । জল আন খাবার দিতে হবে , আসন পেতে দে । "
" এ কি বলছ তুমি ! কাকে ডাকছ ? আমি বাড়ি গিয়ে খাব । "
" বাড়ি যেতে এখনও অনেক দেরী । অনেক খাবার আছে এখানে । আমরা না খেয়ে দেব না । "
" আচ্ছা বুড়িমা তুমি ব্যবসা ছেড়ে দিলে......! "
" কাল থেকে আর বাজার যাব না...ব্যবসাও ছাড়ব না। সবজী বাজার থেকে ওরা হাওড়া স্ট্যন্ডে মাল তুলে দেবে, এখানে আমি নামিয়ে নেব । মিহিরকে টাকা দিয়ে দেব , ওদের দিয়ে দেবে । আয় বুড়ি আয় , আমার বন্ধুর সাথে আলাপ কর । "
ভাতের থালা সাজিয়ে যে মেয়েটা ঘরে এল, তার দিকে তাকিয়ে বুড়িমা সোহমকে বলল, " ও আমার বউমা, ওর একটা কাজ দেখে দাও ... নাতিদের আমি দেখে দেব সারাদিন , স্টেশন বাজার....."
খিদেটাও পেয়ে গেছে খুব , সামনে ভাতের থালা সাজান , পরিপাটি সাজে মেয়েটা , শুধু তাকিয়ে আছে সোহমের দিকে , একটা কাজের জন্য না কি থালাভর্তি ভাত খাওয়ার নিমন্ত্রণ জানাতে চাইছে ! বাড়ি ফিরে ভাত খাওয়ার অভ্যাস , আগামীকাল থেকে কাজের চাপ বাড়বে , এই বাসে বাড়ি ফেরা তারও অনিশ্চিৎ , ফিরলেও পাশের সীটে অনুপস্থিত থাকবে বুড়িমা । বুড়ি ছোঁয়া যখন হয়েই গেল চোখ নামিয়ে ফেলল সোহম ভাতের দিকে । আয়োজনও তো পুরোপুরি সেজে আছে , ল্যব অ্যাসিসটেন্ট পদ শূন্য , পাশের আসনও শূন্য , বাসের সবার সাথেই এবার বুড়ি ডাকে নিজের স্বর মেলাতে পারবে পাশে বসা সহযাত্রীর প্রতি । লোকমুখে মৌ'র কাছে এ খবর পৌঁছবেই । প্রশ্ন করবে মৌ । এখন জরুরী একটা প্রশ্নের উত্তর আগে দরকার , " বুড়ি তুমি চাকরী করবে ? "
কোন উত্তর এল না , আবার দুটো দৃষ্টি মিলল আপাতত ।
Tags:
গল্প