লিপিকা ঘোষ
অনিবার্য —
এইখানে
রূপ আছে। রস গন্ধ বর্ণ।
আমার পা ছুঁয়ে বয়ে যায় গঙ্গা। আমার হাতের আঙুল ছুঁয়ে।
সেইখানে।
আধভাঙা টুকরো ইঁট যে গড়িয়ে পড়ল জলে,
আর ঘিরে গোল গোল করে ঢেউ দিল,
সেসব মিলিয়ে গেল স্রোতে।
পুরনো কবেকার লাল ইঁট টুকরো।
কোন ইতিহাস লেখা ছিল, কেবা তা জানে।
‘জানো কি কেউ তাহা জানো কি?’ বলে এইমাত্র
যে পাখি শিষ দিয়ে দোল খেল বটের ঝুরি বেয়ে
তার নাম জানো কি?
এইখানে পৃথিবী যে থমকে এসে থামে সারা পৃথিবী পরিক্রমা সেরে।
সবকিছু যেন বন্ধকি দেওয়া ছিল তার। সেইকাল থেকে।
ইঁটের টুকরো যে কালের কথা নিয়ে গড়িয়ে গেল।
যেন সাত সাত জন্মের আর মৃত্যুর বৃতান্ত সমূহ।
গতি –
দেহ-ফাঁদে মিশে দেহ।
ছাড়াতে চায় না। তবু ছেড়ে যায়। যায় কোথা?
যেখানে পদ্মার চরে চর জেগে ওঠে।
নিশিথে কে পারাপার করে ছাড়-পদ্মার বুক বেয়ে, নৌকো বায় কেবা?
কেমনতর সে মানুষ এক।
চরে বসে জিরোয় খানিক।
চরাচরে জেগে থাকে রাত্রি এক নিবিড় সে রাত্রি এক।
একজন পারাপার করে। দেহ-ফাঁদে মিলেমিশে থাকে।
ছেড়ে যায়। যেতে না চাইলেও যায় তো। নদী যায়।
নদী তো সাগরে গেল। ছাড়-দেহ গেল কোথা?
রাতজাগা একজন জানে।
শেষ -
এস হে, দুদন্ড গল্প করি। পাশে বসে জিরিয়ে নাও। যে গল্প থেকে আচমকা এক পাখি উড়ে গেলে হলুদ নরম পালক খসে পড়ল। আমার খোলা চুল বেয়ে, চুলের হেনা রঙ বেয়ে মিলেমিশে গড়িয়ে নামল। পালক। আর তুমি হাত পেতে ধরে তা আবার ফুঁ দিয়ে উড়িয়ে দিলে। সেই গল্প করি। গল্পের যেখান থেকে শুরু আর শেষ তার সবটুকু লেগে থাকা দাগ মুছে নিয়ে গেল চিল। আকাশের ঘুর্ণিপাকে ঘুরে ঘুরে চিৎকার করে গেল। সেই তীক্ষ্ণ থেকে দীর্ঘ ঈ দীর্ঘতর হল। সেই গল্প । দুদন্ড সময়কাল ধরে। তা কি কম মনে করো? অনেকটা সময় কাল জেনো। সবটা তো আসলে গল্পের মতন না। গল্পই তো। পাশ থেকে উঠে গেলে টের পেতে পারো। উঠি উঠি করছি কত শতাব্দীর দুপুর ধরে যেন। কে যেন আটকে রেখে দেয়। পা সরে না । সময় হল বুঝি গল্প ফুরনোর। ‘আসি তবে' বলে কখন উঠে যাবে প্রাণ। তোমার ঠোঁটের কোণ ঘেঁষে মেঘ জমল কি? জমা মেঘে বজ্র বিদ্যুৎ চমক! কত শতাব্দী ধরে এরকমটাই তো দেখে আসছি হে। এস দুদন্ড গল্প....
কোন মন্তব্য নেই:
সুচিন্তিত মতামত দিন