শনিবার, অক্টোবর ২৯, ২০১৬
লিপিকা ঘোষ
sobdermichil | অক্টোবর ২৯, ২০১৬ |
গদ্য কবিতা
| মিছিলে স্বাগত
হেমন্তকাল
দিনের আলোয় সেঁকে নিই। রাতের কুয়াশা মেখে নিই অন্ধকারে। অন্ধকারে পাশের বাগানে জোনাকজ্বলেনেভে। ঘরে ঢুকে পড়ে দু একটা জোনাকি পোকা। টিপটিপ করে তার আলো জ্বলে নেভে। বড় রাস্তা জুড়ে নিওনের আলো। সে আলোয় পোকাদের ভিড়। আগুলে ঝাঁপ দেয় পতঙ্গ। মরবে জেনেও তো দেয় ঝাঁপ। অনিবার্য পরিনতি তার। এসব দেখতে দেখতে ঘুম পায়। মানুষের মতো ঘুম। যে ঘুমে নানান স্বপ্ন, দুঃস্বপ্ন চেতন অচেতন অবচেতন স্তরে জাগে। ঘুমের মধ্যেও নিস্তার নেই। স্বপ্নরা জাগে। মানুষই তো স্বপ্ন দেখে, দেখি। রাতের অপেক্ষা করে দিন আর দিনের অপেক্ষা করে রাত। দিনের আলোর কথায় শুরু করেছিলাম। রাতের কথায় শেষ করছি।
রাতের পর দিন আসে কে না জানে। অনিবার্য গতি। হে প্রাচীনা পৃথিবী, তুমি অপেক্ষা করো এ বঙ্গদেশের নতুন হেমন্ত-সকালের রোদ্দুরের। কি অপরূপ রূপ তার। হেমন্তের রোদে সেঁকে নেব শরীর। শরীরে কুয়াশা লেগে আছে। শরীরের রোদ্দুর মেখে নেব। এখন হেমন্তকাল। হেমন্তের দিন আর রাত। মনোরম। ব্যাথাও মনোরম লাগে। যা লিখছি তা কবিতা কি? বদলে যাচ্ছে ধরন। শব্দগুলো এভাবে ভাসিয়ে দিতেও ইচ্ছে করে। কোন কূলে ভিড়বে তারা সে খোঁজ করি। আছে খোঁজ আছে। যে কূলে তীব্র ভাঙন। চাঙড় গড়িয়ে পড়ে জলে নদীর ধার ভেঙে ভেঙে। সেই কূলে ভিড়বে শব্দরা। অনিবার্য গতি।
হেমন্তের সোনা রঙের সকালের অপেক্ষায় রাত কাটে। ঘুম পায়। পায় না। এতদূর লেখা হতে না হতেই লেখার থেকে শব্দ অক্ষরগুলো বেরিয়ে যাচ্চে। সাদা স্ক্রিন ছেড়ে, কী-বোর্ড ছেড়ে শব্দ অক্ষর গুলো গড়িয়ে নেমে গেল মেঝেতে। আমারই লেখা থেকে বেরিয়ে শব্দ অক্ষর দাঁড়ি কমা সব মিলেমিশে রূপ নিচ্ছে দেহের। অবাক দেখছি। দেহ-রূপ মনোহর হল। সুঠাম দেহ। আমারই কবিতার দেহ। নগ্ন। এমন গা-খোলা মনোরম এক দেহরূপ দেখি দরজার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। দরজা খুলে, লোহার গেট খুলে নগ্ন লোকটা বাইরে বেরিয়ে গেল। হেমন্তের ভোর মেখে নিক গায়। রোদে সেঁকে নিক। রাতের পরেই দিন আসে। এখন হেমন্তের দিন-কাল।

