

কি যে বলি, লাইনগুলো কে যেন ভেতর থেকে বলে দেয়। আর টেকনিক্যাল ব্যাপারটা প্রতিদিন শিখি। আমি অগ্রজ ,অনুজ সবার লেখা পড়ি। তরুণদের লেখায় নতুনত্বের আভাস পাই, সেটা টানে। একই তো চাঁদ, কিন্তু মনজগত তাকে কত ভাবে আঁকছে, মেঘের ভেতর থেকে উঁকি দিচ্ছে, তার জন্য যে সাধনা, তা আর কতটুকু পারি , মনে হয় কিছুই পারি না।

অবশ্যই ,কত নাম বলব, তবে এটা ঠিক প্রত্যেকের একটা নিজস্বতা আছে, বাঁক বদল তো হবেই সময়ের সঙ্গে, কিন্তু সেটা যেন চালাকী না হয়ে যায়। শব্দ নিয়ে কি অসাধারণ খেলা করেন অনেকে, কিন্তু একটা তরঙ্গ, একটা যোগসূত্র আছে, যেটা দেখা যায় না, মালার ভেতর সুতোর মত, সেটা ছিঁড়ে গেলে চলবে না।

সংসারকে আর পোষ্যদের যথেষ্ট সময় দিয়েছ ও দিচ্ছ। এখন তো ভলান্টারি রিটায়ারমেন্ট নিয়েছ সংসারের প্রয়োজনেই। কবিরা নাকি সংসার উদাসীন,অগোছালো। তুমি তবে ব্যতিক্রম?


জন্মসূত্রে ,কর্মসূত্রে বিভিন্ন রাজ্যে থেকেছ। ভিন্ন ভিন্ন ভাষা ,সংস্কৃতি কি তোমার লেখাকে প্রভাবিত করেছে?

প্রভাব অবশ্যই আছে। প্রবাসী বাঙ্গালী হিসেবে অনুভব করেছি বাঙ্গালীর অহঙ্কার আর দুর্বলতা দুটোই। শিলং এ বড় হয়েছি, ওদের মাতৃতান্ত্রিক সমাজ, লোকনৃত্য, গ্রামের মানুষের দুঃখ, দারিদ্র ,সরলতা,শহরের চাকচিক্য, সাম্প্রদায়িকতা এসব তো আছেই। আর বাবার কাছে অনেক ধরনের মানুষ আসতেন, নিজে সাতটা ভাষা জানতেন। ছোটোবেলা ঘুরে বেড়াতাম পাহাড়, জঙ্গলে বাবার সঙ্গে, তাদের ডালপালা ছড়িয়ে গেছে বুকের ভেতর। সে আমার অনেক পাওয়া।

তোমার তো গানের গলা খুব সুন্দর, তোমার মায়ের থেকে প্রাপ্তি নিশ্চয়ই। ওনার গান ও তো শুনেছি। চর্চা কর নিয়মিত? প্রথাগত তালিম নিয়েছ কারো কাছে?

না কোনো তালিম নেই আমার। ছোটোবেলা শখ ছিল নদীর কাছে গান শিখব। আমার জ্যাঠাইমা খুব ভাল গান গাইতেন, আর মা ...কত গান যে মা জানেন, এমন এমন গান, যা আর কার ও কাছে শুনি নি,আর সেই সঙ্গে দরদ ভরা অনন্য সুর।

অসাধারণ ছড়া লেখ। বইও তো আছে ফড়িং ফুড়ুত ।স্কুলে শিক্ষকতা করেছ ,নিশ্চয়ই খুব জনপ্রিয় ছিলে ।এখন শ্রোতা কারা?


কোলকাতা বইমেলা নাকি এখনও যাওয়া হয় নি তোমার। ইচ্ছে করে না? এই কোলকাতা বইমেলাতেই তো তোমার দু’দুটো বই বেরিয়েছে। এই বইমেলাকে তো কবি সাহিত্যিকরা মক্কা মনে করে।



গোষ্ঠী আমার নেই। অবশ্যই কবিতা প্রেমী ওখানেও আছেন। রত্নদীপা অমিতাভ, দেবলীনা,আরও অনেকে। তবে আমি থাকতে পারলাম না, বড় বেশী দৌড় ওখানে, ফিরে এলাম আবার।

যে কোনো ছবি, পেন্টিং আমায় খুব টানে। একটা ছবির দিকে তাকিয়ে অনেক ছবি দেখা যায়। যার ভেতর কবিতা লুকিয়ে থাকে। আর ছবি তো শুধু কাগজে আঁকা নয়... প্রকৃতি যে অপূর্ব সন্ধ্যা এঁকে রেখেছে... পাশে ঝিরিঝিরি নদী... পশু পাখি, তাদের ব্যথা ,বিষন্নতা র বেহালা এসব কি লিখতে পারি ভাই... অথচ কবিতা তো তাকেই লেখার কথা বলে...।

তুমিও ভালো থেক খুব । ‘শব্দের মিছিল’ এর পক্ষ থেকে তোমার জন্য অফুরান ভালোবাসা , শুভকামনা । আমরা ধন্য তোমার সাহচর্যে ।