নির্জনে
হাওয়া মাস,
শুকনো হলুদ প্রান্ত।
ছুটে চলেছি, গভীর আহ্বানে
নদী,পথ, ঘাট শুষ্ক, নিরুত্তাপ।
দাঁড়িয়ে থাকা দেবদারু,
রঙীন ছাতা, ধুধু মাঠ,
পরস্পর সিঁড়ি ভাঙছি
পৌঁছতে হবে শেষ বিন্দু।
বহু শতাব্দী পিছনে হেঁটে এসেছি,
গুহায় লিখেছি নাম
শরীর এখন শিলালিপি।
দাঁড়িয়ে আছি একলা মরুভূমি।
জলের গন্ধ বুকের ভেতর,
শুধু বৃষ্টি আসে না।
অহর্নিশ
একটা সুন্দর রকম জীবন।
সবাই চায়।
দোষের নয় তো!
দশটা পাঁচটা কাজ,
থুতনিতে গুটখা খাওয়া
ঠোঁটের সুখ।
রাতের কাঁপতে থাকা সেগুন কাঠ,
নিয়ম মাফিক চলছে ঘড়ি।
শাড়ির নীচে গুটোনো চামড়া,
হিসেবের থলিতে মাইক্রো ফিনান্সের লেন দেন,
দু একটা বিদেশ বিভুঁই,
শীত তাপ সবই মাপা।
সাঁকোর নীচে মাছ ধরছি,
ঝুড়ির ভিতর সর্ষেদানা।
তবুও একটু রকমফেরে
মর্মান্তিক হতে গিয়ে
শেষ অব্দি বেঁচে গিয়েছি।
ফিরে আসার পর
পরশু ফিরেছি।
মন কেমন করে ভীষন
ফিরে আসার পর।
চেনা ঘর, বারান্দা এখন
অচেনা পুরোনো আসবাবের মতো,
তেলচিটে রঙের।
কাপড় মেলা তারের উপর উড়ে বসে
প্রজাপতি, মাছিরা কুলের ঝুড়িতে বসত বানায়।
আমি প্রতিটা দৃশ্য উপভোগ করি।
রোদে পোড়া ঘাসের ডগায়, শিরশিরানি হাওয়া।
চুড়ির আওয়াজে ঘুম ভেঙে যায় ওদের।
আলগোছে ঘুম পাড়িয়ে পথে নেমে আসি।
অচেনা চারপাশ, এরা আমার কেউ নয়।
আমার কোন দিন কেউ ছিল না।
পিছন থেকে ডাক আসে, ঘুরে দেখি
কত দূর পৌঁছে গেছি।
পায়ের নীচে আলতা ফুলের বিছানা।
আঁচল খসলে আনমনে চোখ বুজি।
আবার ডাক শুনি, তাকিয়ে দেখি
দূরে দাঁড়িয়ে আমার ছেলেবেলা
জল ছই-ছই খেলছে।
নীল মাছ আর পৃথিবী
আমার চেনা সে বন্দরে,
যেখানে দুবেলা জাহাজ এসে দাঁড়ায়
হাতছানি দিয়ে ডাকে জল পরীরা।
উত্তাল সমুদ্রের মতো বক্ষে, ঝিনুকের
রেশমী চাদর,দেখতে ইচ্ছে হয় খুব।
তাই আমিও এক একদিন নোঙর ফেলি
অ্যাকাশিয়া দ্বীপে,যেখানে ফুল মানে
মৃত্যু,সুবাস মানে ঘুম।
অতলে যাওয়ার আগে গভীর
আলিঙ্গনাবদ্ধ হতে হয় জলের সাথে।
ঢেউয়ের পর ঢেউ উঠলে নীল মাছ
হয়ে হাবুডুবু খাই।
রুপোলী আঁশ বেয়ে গড়িয়ে পড়ে
সূর্যের রঙ মশাল।
ঝেড়ে ফেলে নোনা জল, পানকৌড়িরা
মুছিয়ে দেয় আমাকে।
ডাঙায় উঠে আসি, শ্যাওলা শরীরে নোনা
দাগের কোলাজ।
ভোরবেলা, স্নান ঘরে কুড়িয়ে পাওয়া আঁশটা জানালা দিয়ে গলিয়ে দি।
জাহাজটা দূরে ভেসে যাচ্ছে।
Tags:
একক কবিতা