আসমা অধরা

asma

অহোরাত্রির তন্দ্রা গো!

হাসিমুখে কান্না গাইছে সন্ধ্যা,"মধুমালতি ডাকে আয়", আর এই ঝরে পড়া মালতিদল হাতের মধ্যে নিয়ে স্থির তাকিয়ে থাকা চাঁদের সাথে মত্ত বঁধুয়া। আজকাল যেন স্বপ্ন ধরা পড়ে- করপুটে জমা থাকা কথা, ব্যথা, মালা হয়ে জড়ায় বকুল গন্ধে। 'স্ব' আর 'শ' কি মিলে যায় কখনো। অথচ তার ঘঁষা কাঁচের চশমা ঘোলা হয়। বাড়িয়ে দিলে সাধারন সুতোর শাড়ীতে মুছে বাড়িয়ে ধরা হাতে বকুল খেলে যায়।

আহা, এই চাঁদে অমন চোখ কি পুরু কাঁচে ঢাকতে আছে বলো? জোছনায় কি জ্বলে যায় দৃষ্টি! আঙুল দিয়ে ছুঁয়ে দিলেই কলঙ্ক লেগে গেল। কোথায়? চাঁদের গায়! বা হাত ধরে হাঁটলে ওইসব আলো আর দৃষ্টির মাঝে কাঁচের ব্যাবধান কেন? ফের গায় সন্ধ্যা, "গোপনে বলে মালা আয়.."

আজকাল হরিদ্রা ফল পাকলে, তাকিয়ে থাকি মাকালের দিকে..সেই সমস্ত কথারা অজস্র বেয়োনেট, বিক্ষত অধর..। যে পক্ষী পেটের ভেতর থেকে চঞ্চু উঁচু করে ঠুকরে খায় বুকের ভেতরে যক্ষের ধন, তারে বলি, বাকীটুকু খাবেনা? সামান্য গ্যাংগ্রীনে কি মেটে আশ! লাল যদি গভীর দাগ ছড়াতে না পারে.. সামান্য শুকোনোর পর টান পড়ে খয়েরী না হয়, সে ক্ষত কতোখানি পোড়ায়? আমি চাই অঢেল, আটপৌরে যন্ত্রনা যার কোন সহবৎ নেই, যে শিল্প জানেনা..

এসো উৎসব করি এইসব ছুৎমার্গের, খুঁচিয়ে বাঁচিয়ে রাখি দ্রাঘিমায় আঁতস ব্যথাসকল। কোল পেতে থাকি, সাবলীল সমস্ত দুঃখের অভয়ারণ্য আশ্রয় হয়ে, ক্লান্ত হলে ভেজা হাতে মুছে দিই তার কপোলের চূর্ণ অলক- ললাটরেখার স্বেদ ও ক্লান্তি।

ক্ষমাহীন প্রেমে আরেকবার অষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরি যারে, সেই নিয়তি আমার। এতোক্ষনে শ্রীকান্ত বাবু শুরু করলেন," আমি নিঝুম রাত, তুমি কোজাগরী আকাশ"। যে কন্ঠ উন্মাদ করে তোলে শ্রুতিগহ্বর, মিলিয়ে গেছে কালের অন্ধকারে। আর তাই বঁধূয়া ভিজে যায় গাঢ় কুয়াশায়।

এই আঙুলে ধরে হেঁটে যাও স্বমহিমা ও 'শ' সমাচার। মনে রাখার কথা নির্দ্বিধায় ভুলে গেলেও ক্ষতি নেই। স্বজাতীয় নখর ও বিষদাঁত জন্মের পরক্ষনেই শাপগ্রস্ত হয়েছিল বলে, বিষ বহনের অক্ষমতায়, কেবল বিষাদ সঙ্গী একাল সেকালে।





Previous Post Next Post