মৃন্ময় মান্না

manna



বাল্য ও ঘুড়ি ...

বাসের জানলায় চোখ, ঘুড়ি দেখছে আমার দিকে
ঘুড়ির কাগজে লেখা ওড়ানোর ইতিহাস
পড়ার পরেই নৌকাডুবি, তলিয়ে গেলাম সমুদ্রে
আমার দু-কানে তখন ভাঙ্গা ব্রিজ জোড়ার আওয়াজ ।

থামল ঢেউয়ের উত্তাল, চোখের কোনে সবুজ মাঠ
একঝাঁক হাফ প্যান্টের পকেটে লুকিয়ে সুতোর বান্ডিল
সুতোর নাম বন্ধুত্ব, আড্ডা জমাল চেনা ঘাট
ঘুড়ির শব্দ মেঘে উড়ে গেল একঝাঁক গাঙচিল!

তখন ব্যস্ততা কফিনবন্দি, ঘাসের গায়ে বন্ধুত্যের দাগ
ঘুড়ির সাথে বেড়াতে যেতাম আকশের বাড়িতে
নীল বাড়ির মেঝেয় তখন বিছিয়ে দিতাম আহ্লাদ
সম্বিত ফিরত হঠাৎ গোধূলির চোখ রাঙ্গানিতে ।

এখন ডাক শুনি ব্যস্ততার, ইতিহাস সমুদ্রে রক্ষিত
যখন তখন তলিয়ে যাওয়ার ‘সময়’ নিরুদ্দেশ
বোকাবাক্সের আধুনিকতায় বাল্য এখন ধর্ষিত
মুখ ফেরালাম, সামনে অফিস কিম্বা বাড়ির গেট ।।



টুকরো অন্ধকারের ওরা ...

টুকরো অন্ধকারে আমি রোজ তাদের দেখতে পাই
যখন সৃষ্টিগুলো হাতের মুঠোয় এসে ছুটোছুটি করে
তখন ওরা ইচ্ছে নামক  ব্যক্তিটার পিঠ চাপড়ে বলে, “সাবাস!”
তখন আমার কলমের সঙ্গে ডাইরির দীর্ঘ চুম্বন শুরু হয়ে যায় ...
মাঝে মাঝে কলমটা নীরবে ডাইরিকে বলতে থাকে, “আমার মুখ শুকিয়ে এসেছে, এবার তোমার দুষ্টুমি থামাও!”
কিন্তু ডাইরি তো বেশ্যার জাত, সঙ্গে সঙ্গে ওই কলমের সঙ্গ ছেড়ে অন্য কলমের যৌনলালসার অংশীদারি হতে চায়।
অন্ধকারের ওরা আবার এই সব দেখে সজোরে হাততালি দিয়ে ওঠে,
মেঘলা দিনেও ঘরের কোনে থেকে যায় একটুকরো অন্ধকার
চেনা গোধূলিতে ওই ব্রিজের রেলিঙের ছায়ায়ও আমি একটুকরো কালো দেখি ...
সেখানে ওরা চুপিসারে লুকিয়ে থাকে আর আমার সৃষ্টির উদ্রেক করে –
মোমবাতির আলোর গন্ধেও ওরা ছুটে আসে,
টুকরো অন্ধকার খুঁজে নিয়ে দখল করে দর্শকাসন
তারপর চারিদিকে নিমেষে ছড়িয়ে দেয় মায়াবি পরিবেশের বীজ...
ওরা চিরকাল আমার চেনা-অচেনার মাঝ পর্যায়েই থেকে গেছে
সাধ করে আর আলাপ করা হয়ে ওঠেনি কখনও,
তবুও আমার দেখা প্রতিটি টুকরো অন্ধকারে ওরা লুকিয়ে থাকে আর
আমার ডাইরি ও কলমের যৌনতার প্রদর্শনকে ক্রমাগত উৎসাহ দিয়ে যায়!



Previous Post Next Post