গরমকালের কিছু গল্পকথা
গরমের ছুটি
কত কিছু যে শেখায় ওই চলে যাওয়া ছুটিমাখা চড়ুইবেলা।ঘরের বন্ধ জানলার ওপরে ঘুলঘুলি দিয়ে আসা আলোটুকু কি মমতাভরে আলোছায়া আলপনায় ভরিয়ে দিত ঢেউতোলা বিছানার চাদর। খসখসের গন্ধমাখা টানা পরদায় লুকোচুরি খেলত অস্ফুট গানের কলি, টুকরো হাসি। টেবিলে খোলা তোমার সাদা অঙ্কখাতায় মুখ লুকাতো লাভক্ষতির হিসাব,গোল চৌকো তেকোণা যত পরিমিতির মাপজোক। ‘ভালবাসা’ শ
ব্দটা বাংলা হাতের লেখার খাতা থেকে কি সহজেই না চারলাইনের রুলটানা ইংরাজি হাতের লেখা খাতায় ভোল পাল্টে হয়ে যেত ‘লাভ ইয়ু’। রক্ষণশীল আকাশটা মুখ নামিয়ে ঝুঁকে আসত গরমের ছটফটে দুপুরবেলার ওপর। ঠোঁট শুকিয়ে যেত অসহ্য পিপাসায় । রান্নাঘরের জানলাপথে চড়াইদম্পতি উঁকি মেরে যেত খড়কুটো বিশ্বাসে। সময়েয ঘুড়িটা ভোঁকাট্টা হয়ে ছাদে উড়ে আসা কাঁচা আমের গন্ধভরা এলোমেলো হাওয়ায় লুটিয়ে পড়ত তোমার খুলে রাখা সাদা ফুলছাপ শার্টের বোতামঘরে, আমার যুঁইফুল গন্ধভরা খোলাচুলের আলসেমিতে। বাগানের সবুজ ঘাসে পিতলরঙা রোদ ধীরপায়ে হাঁটতে হাঁটতে পেরিয়ে যেত দাবার মত ছককাটা উঠোন,রঙনফুলের মত লাল মোরামের রাস্তা, নাগকন্যার বেনীর মত কালো পিচরাস্তা। সেফটিপিন আঁটা তকমার মত দিনগুলোর ওপর সেঁটে যেত গরমের ছুটিমার্কা লেবেল। এখনও আমার হাতের মুঠোয়, আঙুলের ডগায়, চোখের পাতায়, ঠোঁটের কোণে ঘামগন্ধি ধুলো ও ঘাস ছোঁয়া পরাগরেণু দিনের শব্দ আর টিমটিমে লন্ঠণ, সাদাটে মোমবাতি, ফ্যাকাশে চাঁদের আলোর রাত-অক্ষর ।গরমের ছুটিরা এখনও প্রতিবছর আসে… প্রতিবছরই ফিরে যায়…শুধু এখন আর আমি তোমার জন্য ভাবিনা।
ব্দটা বাংলা হাতের লেখার খাতা থেকে কি সহজেই না চারলাইনের রুলটানা ইংরাজি হাতের লেখা খাতায় ভোল পাল্টে হয়ে যেত ‘লাভ ইয়ু’। রক্ষণশীল আকাশটা মুখ নামিয়ে ঝুঁকে আসত গরমের ছটফটে দুপুরবেলার ওপর। ঠোঁট শুকিয়ে যেত অসহ্য পিপাসায় । রান্নাঘরের জানলাপথে চড়াইদম্পতি উঁকি মেরে যেত খড়কুটো বিশ্বাসে। সময়েয ঘুড়িটা ভোঁকাট্টা হয়ে ছাদে উড়ে আসা কাঁচা আমের গন্ধভরা এলোমেলো হাওয়ায় লুটিয়ে পড়ত তোমার খুলে রাখা সাদা ফুলছাপ শার্টের বোতামঘরে, আমার যুঁইফুল গন্ধভরা খোলাচুলের আলসেমিতে। বাগানের সবুজ ঘাসে পিতলরঙা রোদ ধীরপায়ে হাঁটতে হাঁটতে পেরিয়ে যেত দাবার মত ছককাটা উঠোন,রঙনফুলের মত লাল মোরামের রাস্তা, নাগকন্যার বেনীর মত কালো পিচরাস্তা। সেফটিপিন আঁটা তকমার মত দিনগুলোর ওপর সেঁটে যেত গরমের ছুটিমার্কা লেবেল। এখনও আমার হাতের মুঠোয়, আঙুলের ডগায়, চোখের পাতায়, ঠোঁটের কোণে ঘামগন্ধি ধুলো ও ঘাস ছোঁয়া পরাগরেণু দিনের শব্দ আর টিমটিমে লন্ঠণ, সাদাটে মোমবাতি, ফ্যাকাশে চাঁদের আলোর রাত-অক্ষর ।গরমের ছুটিরা এখনও প্রতিবছর আসে… প্রতিবছরই ফিরে যায়…শুধু এখন আর আমি তোমার জন্য ভাবিনা।
নীড়
অলস গ্রীষ্ম...জানলার ফ্রেমে বাঁধানো রোদ ঝলসানো আকাশ আমার অবসর। সুর্যাস্ত থেকে সূর্য্যোদয় কিংবা হয়তো, তারও আগে, তারও পরে-আমার চেনা পৃথিবীর পরিসর ওখানেই আটকে গেছে আজ অনেক বছর। বৈশাখ থেকে চৈত্র নাকি চৈত্র থেকে বৈশাখ...মনে নেই ঠিকমতো...যেন উড়ন্ত পাখির ঝাঁক থেকে পিছিয়ে পড়েছে একপাখি,তার দু’ডানায় সংসার, জীবনের সহজ সরল ব্যর্থতার ভার, ঠোঁটে কাঠকুটো, বয়ে নিয়ে চলে ছোট্ট বাসায়, গাছে, আবার উড়ে উড়ে আসে আমার ঘরের কাছে....
জানলার নীচে প্রদীপহীন তুলসী গাছটা বাড়তে বাড়তে জঙ্গল,ম্লান এই ঘর, পণ্যগ্রস্থ গার্হ্যস্থ, ভূতগ্রস্ত দিন, দরকচা মারা শব্দের পারস্পরিক বিনিময়,তার সাথে ভীষণভাবে মানানসই নির্জলা গ্রীষ্মের শুকনো বনতুলসীর ঝোপ।বর্ষার সুখী মঞ্জরীতে, বসন্তের সবুজের চাকচিক্যে প্রানবন্ত গাছে আজ ভরা নিদাঘের বর্ণহীন শুষ্কতা,তবু সেই বনতুলসীর শুকনো কাঠকুটোতেই সুখী নীড় গড়ে ওঠে ধীরে ধীরে, চেষ্টায় কিনা হয়?
যখন সংসারটা আমাদের ছিল, তখন তুলসীতলায় জলটা আমিই দিতাম; সংসারের মঙ্গলকামনায় জ্বালাতাম সন্ধ্যাপ্রদীপ,আমি তুমি বিভাজনে তুমি এখন পরযায়ী পাখির দলে.. অভ্যাসবশত পালন কর হলুদ দাম্পত্য, তাই ভরা জ্যোৎস্নাতেও চাঁদের আলো নীল । আগাছায় ভরেছে ঘরদুয়ার..
আজ পাখির দেখাদেখি আরেকবার চেষ্টা করে দেখি, তুমিহীন অমঙ্গলের সংসারে আরেকবার রাঁধবার, চুল বাঁধবার,আরেকবার তুলসী !!গাছে জল ঢেলে প্রদীপ জ্বেলে সাজিয়ে দেখি,সূর্য্য ডোবার সময় হলে, নীড়গামী পাখির ঝাঁকে তুমি ফিরে আসো কিনা!
প্রবাসী গ্রীষ্ম
গ্রহণ লেগেছে,ফুরিয়ে যাচ্ছে বসন্তের গন্ধমাখা রঙীন দিন।
নক্ষত্রের ঘ্রাণ মেখে আকাশ চেয়ে আছে অনিঃশেষ,
আতপ্ত দিনের দীর্ঘশ্বাসে মুছে যাচ্ছে চার দেয়ালের যতি—
দিগন্তে দৃশ্যান্তর,
দৃশ্যের অপর পারে নিভে আসছে মানুষের চোখ।
রাহু কেতু নয়,আকাশচারী মেঘেদেরকে ঢেকে নিচ্ছে নদীপথ ক্লান্তি।
নদীপথ ফুরালেই আদিম অরণ্য কথা ...
গুহাচিত্রে পাথরে পাথরে অজানিত দীর্ঘশ্বাস।
নি:সঙ্গ চিলের ডানায় ভেসে আসে চাতক তৃষ্ঞায় আক্রান্ত বৈশাখী দিন...
আমিও নিসঙ্গতার ঢেউ ভাঙি
ছায়া, একটু বৃষ্টিকণার সন্ধানে...
অশ্রুও নোনা জলের দাগ রেখে হারিয়ে যায়...মেঘেরাও জলহারানোর অভিশাপে অদৃশ্য... সুর্যটাও আকাশে বড় একা...তোমার - আমার মাঝের হাইফেনটাই বাড়তে বাড়তে সীমানার কাঁটাতার ছুঁয়ে যায়।
Tags:
দীর্ঘ কবিতা