আমার একজন রবীন্দ্রনাথ আছে। কন্ঠে উড়াল সুরমন্ত্র খুঁড়ে চলছে তো চলছেই, চোয়াল আসে শক্ত হয়ে বিলাপধ্বনির বিলুপ্ত আত্মকথার ধোঁয়াশা আওয়াজে। আমার আরো আছে... বৃক্ষ! থাকে সেও বুকের কাছে, আর জলের আলো - আলোর জল এবং নাভির চোখ - চোখের নাভি .... শীতল যত জলগন্ধ মাখামাখি তাতে ফুল, পাখি, নদী - সব আমায় উদাস আরদ্ধভাব অতিথি করে নিয়ে চলে ভিন্ন গ্রহে...আর এঁটে থাকি এমনই এক শক্তদৃশ্যে, আহা এ যে গ্রহাচার্য! অবাক যত শতশত নির্বাক শস্যপ্রাণী... মুগ্ধশস্য বোনে প্রায় উন্মাদ যত নারী, দুইহাতে ধরা তাদেরই কাটা বুনি দিয়ে। এইসব অবাক দৃশ্যের শবদেহ ফেলে চলে আসি, নৈকট্য আশ্বাসে নীরবতাকে ভালোবাসতে শিখবো - আমার প্রাণের মানুষ আছে প্রাণে...
গান গাওয়া গানওলা জানে কি কিশোরীর ব্রণে কত বিষ জমে থাকে! বিষ বিষ যেন জেনে শুনে বিষ করেছি পান... যন্ত্রণা এক অজগর, চোখের কালো দ্বীপে পৌঁছে দেয় অবাধ্য যত জলমুক্তা। তখন তুমি তাই তুমি তাই নয় যে তোমার প্রাণে যাহা চায় তাই পায়! আর পাওয়া কি ভাসমান প্রাণহীন লাশ হয়? যদি হয় তবে তা একজন কবি'র হবে অথবা হাল ছাড়া কোনো একজন নাবিকেরই। কেননা রবীন্দ্রনাথ চেয়েছিলো হতে বাদল দিনের প্রথম কদম ফুল...
শরৎ চলে গেলো, অবশিষ্ট যেসব শিউলি আছে তা নিয়ে আপাতত ভাবনা নেই, যারা রাতকে কালো করে বাড়ি ফেরে প্রিয় বিছানাকে পৃথিবী ভেবে-ভেবে সেরে ফেলে আগাম বৈশাখ উদযাপন। তাদের কাছে হাঁটু মুড়ে প্রার্থনা করলেও সকল দুঃখের প্রদীপ নিয়ে সমাধানে পৌঁছানো যাবে না তারচেয়ে লক্ষ্য হোক জীবনানন্দের বাড়ি, আর সেখানে যথেষ্ট দাশপ্রীতি নিয়ে কলাপাতায় মুড়ানো বেলে মাছ আর চালতার টক খাওয়া যেতে পারে, কে তখন বাজায় বাঁশি এই সুরে কাছে দূরে! দেয়ালে টাঙানো যে রবীন্দ্রনাথের প্রোট্রেট দেখছো, চিত্রকর ভুল করে তার চোখ দু'টিকে বেশি রঙিন করে দিয়েছে আর এতসব বলছি ছবিচিত্র নিয়ে নয়, আমার সত্যিই একজন রবীন্দ্রনাথ আছে...
Tags:
মুক্ত গদ্য