অনেকখানি প্রতিশ্রুতি জাগিয়ে পথ চলা শুরু করল উষসী ভট্টাচার্যের কলম। 'সূর্য জন্মের প্রতিশ্রুতি' কবির প্রথম কাব্যগ্রন্থ হলেও মনে হল না লেখনীতে এতটুকু আড়ষ্টতা আছে। স্পষ্ট,দৃপ্ত উচ্চারণে কবিতাগুলো এসেছে যথার্থ সূর্য জন্মের প্রতিশ্রুতি নিয়ে। কবির সহজ স্বীকারোক্তি- “দিনক্ষণ দেখে গদ্য কবিতা জন্মায় না অপরিকল্পিত বিস্ফোরণে যখন ঠোকা লাগে, মনস্তত্ত্ব নামক আজন্ম সৈনিকের তখনই অগ্ন্যুৎপাত” এই বিস্ফোরণের প্রতিচ্ছবি সমগ্র কাব্যগ্রন্থে।
উষসী ভট্টাচার্য এই ক্ষয়িষ্ণু সমাজের চিত্র দেখেছেন, চিনেছেন তার নিজস্ব উপলব্ধি দিয়ে। ফুটিয়ে তুলেছেন এক-একটি চিত্রকল্প। কখনও ব্যঙ্গের তীব্র কষাঘাতে সমাজকে ফালাফালা করেছেন তাঁর ক্ষুরাধার লেখনী শৈলীতে- “বাবা বলেছেন রাস্তার কুকুর লাই দিতে নেই, উল্টে ঝাপটা মারতে হয় দাপটে। এক বিকেলে এক পাল কুকুর তাড়া করল নখ দাঁত খিঁচিয়ে কামড় বসানোর উগ্র তান্ডব...... দু পা কুকুর জব্দ করার পন্থা বলে দেননি বাবা ইনি জানতেন জানোয়ার মানেই কেবল চার পা!” কুকুর-২ কবিতাটিতেও তেমনি শ্লেষ। “নিজেকে মাঝে মাঝে যুধিষ্ঠির মনে হয়। গলি থেকে বাড়ি, বাড়ি থেকে বড় রাস্তা সর্বদা কোনও না কোন কুকুর পেছনে চলেছে।”
অপর একটি কবিতা 'চোখ' সমাজের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় অনেক চিত্র.. "চোখের পাওয়ার আমার আর বাবার এক হয়েছে, সময়ের কাঠগড়ায়। বাবা সুরঙ্গ আঁকতেন, আমি চক্রব্যুহ বুনেছি। বাবা বর্ণ সাজাতেন, আমি কালির ছিটে পেটে ধরেছি। বাবা সূর্য-তারা দেখতেন, আমরা কারগিল, রেড লাইট দেখেছি। বাবার দৃষ্টি ক্ষীন ছিলো; আমরা অন্ধ হয়েছি'।
কাব্যগ্রন্থের শেষে কয়েকটি লাইন বারবার পড়ার মতো.. মনে হয় 'সূর্য জন্মের প্রতিশ্রুতি' কবির নিজেরই প্রতিশ্রুতি.... ''পিঁপড়ে খাওয়া শরীরে জোনাক পোকা জ্বললে উপন্যাসের খাতা বদলায় কবিতায়, সূর্য জন্মের পথে চলতে থাকো তুমি যার শিরোনামে আমার ছদ্মনাম'।
কাব্যগ্রন্থঃ- সূর্য জন্মের প্রতিশ্রুতি।
কবিঃ- উষসী ভট্টাচার্য।
প্রকাশনীঃ-ইতিকথা।
কবিঃ- উষসী ভট্টাচার্য।
প্রকাশনীঃ-ইতিকথা।
Tags:
প্রকাশিত কাব্য গ্রন্থ