"ভোরের বেলা কখন এসে
পরশ করে গেছো হেসে "
আর এখন তো কথামৃতের বুড়ো গল্পবলিয়েটার হাত ধরে যেই মুহূর্তে হাজির হও সেই ক্ষণেই আমার সূর্য ওঠে, পাখিরা ভোরজাগানিয়া গান গায়, আমার সকাল হয়। প্রথম যেদিন গীতবিতানে দেখা, বোঝা না বোঝা এক অসীমের দ্বারোদ্ঘাটন হোল। বিতানের পুষ্পপত্রের মধ্যে থেকে একটি পাতা উড়ে এসেছিলো ... "অলি বার বার ফিরে যায় , অলি বার বার ফিরে আসে তবে তো ফুল বিকাশে। " সেই থেকে আজও নব নব চেতনার ফুলে নব নব সৌরভের টানে শুধু ভেসে যেতে চাওয়া ।
আর এখন তো কথামৃতের বুড়ো গল্পবলিয়েটার হাত ধরে যেই মুহূর্তে হাজির হও সেই ক্ষণেই আমার সূর্য ওঠে, পাখিরা ভোরজাগানিয়া গান গায়, আমার সকাল হয়। প্রথম যেদিন গীতবিতানে দেখা, বোঝা না বোঝা এক অসীমের দ্বারোদ্ঘাটন হোল। বিতানের পুষ্পপত্রের মধ্যে থেকে একটি পাতা উড়ে এসেছিলো ... "অলি বার বার ফিরে যায় , অলি বার বার ফিরে আসে তবে তো ফুল বিকাশে। " সেই থেকে আজও নব নব চেতনার ফুলে নব নব সৌরভের টানে শুধু ভেসে যেতে চাওয়া ।
মনে পড়ে , তখন কথামৃতের অমৃত অক্ষরে আলপনা ঘেরা অলিন্দে গল্পের আসরে সবে গিয়ে বসছি, হঠাৎ একদিন তোমাকে বসে থাকতে দেখলাম। ছাই উড়িয়ে অমূল্য রত্নের সন্ধানকারী তুমি ....অমৃত ভান্ডটি থেকে সামান্য অমৃতও কী আস্বাদন করোনি ? সেই প্রশ্ন নিয়ে একবার গীতবিতান,একবার অমৃতের খনি তো একবার তোমার জীবনের কাছে গিয়ে দাঁড়িয়েছি। দুজনেই বলে দিলে সত্যের দ্বিতীয় কোন রূপ নেই। এক জায়গায় গিয়ে বক্তা শ্রোতা সেই একেই একাকার।
তোমার জীবন বললো ... "বন্ধুবান্ধব, সংসার, স্ত্রী -পুত্র কোনদিন আমি তেমন করে আঁকড়ে ধরিনি "তারপর একদিন কথামৃতের পাতায় জ্বলজ্বল করে উঠলো ... "স্ত্রী পুত্র, বাপ মা সকলকে নিয়ে থাকবে যেন কত আপনার লোক কিন্তু মনে জানবে তারা কেউ নয়। "
তুমি গাইলে---"জড়ায়ে আছে বাঁধা ছাড়ায়ে যেতে চাই, ছাড়াতে গেলে ব্যথা বাজে " আর ওদিকে দেখলাম অমৃত ভাষা ..." চোখ বুজলেই নেই , কেউ নেই ! তবু নাতীর জন্য কাশী যাওয়া হয় না। গুটি পোকা আপন নালে আপনি মরে। "
কথামৃত বলছে - "ঈশ্বরকে যদি খুঁজতেই হয় তবে তা মানুষের মধ্যে খুঁজো। "তুমি বলে উঠলে" কোথায় ফিরিস পরম শেষের অন্বেষণে ? অশেষ হয়ে সেই তো আছে এই ভুবনে।"
এক বললো ছোট 'আমি' , বড়ো 'আমি'। আরেক এক বলে কাঁচা 'আমি' , পাকা ' আমি'। কাঁচা 'আমি'র বাইরে বেরিয়ে এসে বললে - "ভাই তুমি যে ভাইয়ের মাঝে প্রভু, তাদের মাঝে তাকাই না যে তবু ... সঁপিয়ে প্রাণ ক্লান্তিবিহীন কাজে প্রাণসাগরে ঝাপিয়ে পড়িনে'' । কথামৃতে ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ আর একধাপ এগিয়ে এই ক্লান্তিবিহীন কর্মকে নিস্কাম কর্ম আখ্যা দিয়েই রেখেছেন... " বাপ মা'র ভিতরে যে স্নেহ সে তারই স্নেহ , দয়ালুর ভিতরে যে দয়া তারই দয়া । "
কথামৃতের অমৃত বর্ষণে ভিজতে ভিজতে জানলাম "এক একটি উপাধি হয় আর মানুষের স্বভাব বদলে যায়। ধুতি পড়লো তো নিধু বাবুর টপ্পা গাইতে আরম্ভ করে । "তুমি বলে গেলে - "নামটা যেদিন ঘুচবে নাথ বাঁচবো সেদিন মুক্ত হয়ে। "
ঠাকুর গল্প বললেন , "সার্জেন সাহেব রাতের আঁধারে লণ্ঠন হাতে করে বেড়ায়, তার মুখ কেউ দেখতে পায় না কিন্তু ঐ আলোতে সে সকলের মুখ দেখে আর সকলে পরস্পরের মুখ দেখে। যদি সার্জেনকে কেউ দেখতে চায় তাহলে তাকে প্রার্থনা করতে হয়, বলতে হয় সাহেব কৃপা করে একবার আলোটি নিজের মুখের উপরে ফেরাও, তোমাকে একবার দেখি। "আর তারপর একদিন শিখলাম তোমার গান "এতো আলো জ্বালিয়েছো এই গগনে ...
কী উৎসবের লগনে
সব আলোটি কেমন করে
ফেলো আমার মুখের পরে
আপনি থাকো আলোর পিছনে
প্রেমটি যেদিন জ্বালি হৃদয় গগনে
কী উৎসবের লগনে
সব আলো তার কেমন করে
পড়ে তোমার মুখের পরে
আপনি পড়ি আলোর পিছনে । "
আমাকে ঘিরে রয়েছে একটি খোঁজ কথামৃতের কথা গীতাঞ্জলীতে গাঁথা হয়ে রয়েছে --- দেখছি এক সাধকের মধ্যে থেকে এক মহাকবি আর এক মহাকবির মধ্যে থেকে এক মহাসাধক উঠে আসছে ....বলছে .... মিছরির ছুরি সিধে করে খাও আর আড় করে খাও , মিষ্টি লাগবেই।
Tags:
বিশেষ পাতা