জারিফা জাহান



মন ভালো করার সেফটিপিনটা যে মায়ের হাতের কোন চুড়িতে থাকে আজ অবধি বুঝলুম না,তেমনি গাড়ি-প্লেন এর যুগেও যে কেন ট্রেন এ চাপার জন্য মনটা অমন আকুলিবিকুলি করে ঠাহর পেলুম না। সেই যে জানলা খোলা রেখে হাওয়াকে একটু গলা জড়িয়ে আদর করা,দু'টাকার লেবু লজেন্স মুখের ভিতর এ-গাল ও-গাল করে খুব মন দিয়ে হার-দুল না বাছলে যে সারাদিন ট্রেন হারানোর কষ্ট লেগে থাকে রুমালে।

বেশুমার সে কষ্টেরা অবশ্য অফিস টাইমের বনগাঁও লোকালের মাসিমা দিদিমার সুমধুর বাকচাতুর্য্যে বেমালুম গলে মাফলারে ঢাকা সুন্দরী রূপকথা। অ্যাতো বিনবিনে ছবিতে ভাঁজ করা ন্যাপকিনে চায়ের ছলটুকুর মত লেপ্টে থাকে কিছু দাগ-লালঠোঁট,টানা ভ্রু,পিঠকাটা ব্লাউজ,নাভির নীচে শাড়ি,ম্যাচিং নেলপালিশ-ইস,বাজারী মেয়ে নিশ্চই নাকি হিজড়ে?

- দেখবি এখুনি হাততালি দিয়ে জোর করে পয়সা লুটে নেবে।
- চুপ কর,আঙুল দেখাস না,এখানেই চলে আসবে।
- এরা এত অদ্ভুত সাজে কেন? অসভ্য লোকজন,লোকের থেকে পয়সা নিয়ে বড়লোক হবে আর জোকারের মত সাজবে।

প্রতিবাদ করতে গেলুম, হাতটা কে যেন ধরে নিল-'চুপ কর বোন,বলতে দে ওদের,কিছু লোকের মুখ আটকানো যায়না। 

তাকালুম ঘন চোখে,জমিয়ে রাখা লাল নীল গোলাপী জেল পেন যখন হারায় জীবনের বড়ো রাস্তার বাঁকে,তখন এই চোখেই মখমলি আলো পড়ে প্রতিফলিত হয় হৃদয়ের আনাচেকানাচে। এরপর এল-জি-বি-টির হয়ে স্লোগান তুলে ফেবুতে লাইক কুড়োবো আমরা ঠিক যেমনটা আমুদে হাসির ওপর নির্লজ্জের মতো আক্রান্ত পতাকার রঙিন পোঁচ চালিয়ে অপমান করেছিলুম নিহতদের।



Previous Post Next Post