সাঈদা মিমি

শেষ পাতাটি ঝরে যাবার আগে 
১।

সিঁদুরে চাঁদের গায়ে ছেঁড়া ছেঁড়া
রূপকথা নাচে, আমারও ইচ্ছে করে
খোলামাঠ দাঁপিয়ে বেড়াই-
চাঁদবুড়ি, আমি...
আজ চকলেট রেস হয়ে যাক!
নিমফুল ঘ্রাণ দিয়ে যায়, 'দিন তো এমন
যাবে না সই জীবনের অর্থ না বুঝে!'
ধানক্ষেতে বথুয়ার শাক, লকলকে ঘাস,
শিরিষের মগডালে রাতজাগা
অচেনা পাখিটা, সবাই তো বলেছিলো,
তোমার জন্মসাথী
ছায়াহীন মৃত্যু যমজ; কোনদিন
তার কথা ভুলো না, কেমন?
নিস্তরঙ্গ কেঁপে ওঠে, ম্লান আলো
অন্ধকারে ক্ষয়ে যায় রসদ ফুরালে


২।

হারিয়ে যাওয়ার চিহ্নে চোখ রাখা
যায়, হারাবো? এমন কি সাধ্য আমার!

উনিশ বছরে যাবো? ভুলে পাওয়া
অপমান শোধবোধ করে দিয়ে
সাজাবো নতুন করে পুরোনো জীবন!

এসব ভেবেই সুখ, যে দিন মুখ বুজে
পাথরের বুকে জলনকশা এঁকে গেছে
কোনদিন ফিরে আসবে না...

চওড়া বাহুর নীচে কৃষ্ণগহ্বর,
জীবনের চেয়ে ভালো নির্লোভ মৃত্যুর ডাক....



৩।

যেসব অনিন্দ্য দিন জারুলের
অন্তিমে , সেখানে,
মাটি উপড়ে যাওয়া শেকড়ের
নিচে চন্দনকাঠের বাক্সটা রেখে এসেছি...

একটা হাসিমুখ পুতুল, প্রথম বানানো
মখমল ফ্রকের কাপড়ের টুকরো,
একজোড়া রূপার নূপুর;
একটা ঐশ্বরিক ক্যামেরায় তোলা ছবি-

কোনদিন ফিরবো না—
সেই পথের ধূলায় আমার
পায়ের ছাপ দূরঅতীত হয়ে গেছে!
এতটাই দূরের? আমার
স্মৃতিকোষে সেসব কেবলই ছায়ার
মতন উড়তে উড়তে জারুলের
নগ্ন শেকড়ে হারিয়ে যায়!

শিশুরাত কৈশোর ছুঁলো, শেষপাতা,
ভোর কি মাটিকে ছোঁবে?





Previous Post Next Post