মোকসেদুল ইসলাম

বৃত্ত পথে বন্দি জীবন
ভীতু সূর্যটা তাপ দিতে ভুলে গেছে বলে দীক্ষা নিতে আমাকে
জ্বলন্ত অগ্নিকুন্ডের কাছেই যেতে হয় বার বার
সন্ন্যাস ব্রত নয় সত্যিকার মানুষ হওয়ার আশায়।

তবুও বিষন্ন আকাশ জুড়ে এ যেন প্রাচীন অভিমান
অদ্ভুত ঘোর লাগা দিনে কেন মিছে অশ্রু ঝরাও।

জেনে রাখ, আমিও পাকা খেলোয়াড়,
দাবার ঘুটির দেবো এমন কঠিন চাল
বৃত্তপথেই কাটবে তোমার সারাজীবন।



সময়ের ঘড়ি



প্রজন্ম জ্ঞান আমার  জানা নেই
উঠোনে ছড়িয়েছি মানবিক বিষ।

এবার হিসেবের খাতাটা খোল,
তোমাদের সাদাকালো শৈল্পিক ভালোবাসায়
শুধু মলাটবদ্ধ সুখ।

শীর্ণ শীতের দিনে বুড়ো মানুষের মতো শুধু পিছুটান,
কথা হোক চোখে চোখ রেখে
তীব্র শোকে ভেঙ্গে পড়ুক সময়ের ঘড়ি।



নোনা কষ্ট


বুকের ভেতর নোনা কষ্ট রেখে আজকাল হেসেই উড়িয়ে দেই অনেককিছু
স্বার্থের বাণিজ্য করে ঘরে ফিরি ঘাসফুল সন্ধ্যায়
শাদা কাফনের মতো শীত নামলেই আমাদেরও বয়স বেড়ে যায় দেড়গুণ
টাইম মেশিনের কথা ভুলে গিয়ে উঠে পড়ি পঙ্খিরাজ ঘোড়ায়।

এখন চাঁদের পাশে দাঁড়ালেই আমরাও আলোকিত হই
উপহাসের চিরকুটে লিখে রাখি অপ্রাপ্তির ইতিহাস
আমাদের সময়-অসময় নেই বন্ধু তারপরেও
গলা বাড়িয়ে ডাকলেই উৎসাহে যোগদেই তোমাদের মিছিলে।



সভ্যতার কান্না

ডানে আমার স্বপ্ন কন্যা
বামে বেহালার সুর
বাকি সবদিকে আঁধার কালো
সিথানে রাখা আছে ঘুম।

জানালাগুলো সব খুলে দাও
আঁধার করুক আজ খেলা
আলোর খেয়ায় দিচ্ছি পাড়ি
নদীর নেই কোন মানা।
সব ইতিহাস জানতে নেই
কিছুটা খেয়ে ফেলে ঘুনপোকা
ক্ষয়ে ক্ষয়ে যায় সভ্যতা সব
মানুষ বড়ই বোকা।



জীবন যেমন চলে


ভায়োলিনের সুরে আমরা জেগে উঠি
গেয়ে উঠি মৃত্যুর গান
'আনন্দ' আমাদের ঘটি-বাটির মতো
ঝনঝন শব্দে ভেঙ্গে পড়ে অনুভবের দেয়াল।

সম্ভ্রম হারানো কুয়াশায় কৌমার্য খুঁজি সভ্য শহরে
প্রেমের ভেতর কোন গভীরতা নেই জেনেও
অভিশপ্ত ঈশ্বর কে গালি দিয়ে পাড় হই উন্মত্ত নদ।
পাপের ভ্রুণ আমাদের মাথার ভেতর
বুকের ভেতর বেড়ে ‍উঠছে কালসাপ।



ক্যামেরা


দক্ষ ক্যামেরাম্যান আমি
এটা সবাই জানে তারপরেও
ক্যামেরা চালাতে বললেই ভুল করে ফেলি
ঠিক আঁধার ঘরে মানুষ খোঁজার মতো।

চারপাশে এত্তো সুন্দরীর মুখ
কার মুখশ্রী তুলে আনবো আমি?
ক্যামেরা হাতে থাকলেই বিভ্রাটে পড়ে যাই
তুলে আনব কার লজ্জাবনত মুখ।


Previous Post Next Post