জয়দীপ চক্রবর্তী



যে শব্দ স্রোতেও নিরুত্তাপ



১।

বারংবার দ্বিধাহীন সহজ হেরে যেতে পেরেছি,তাই কাপুরুষ ভাবছিস?বল ঠিক তো?পরাজয়ের মান্যতার আড়ালে, তোকেই সমতার অবশিষ্টাংশে গাঁথা আর,নিজস্বতা বলতে পালক বিষন্নতা মরিয়া- শব্দমালার গৃহস্থালি।
সেই গোপনীয়তার চিকচিকে বাগান জয়ের গন্ধে মম করে.....
আমি মগ্নচেতনার ছলছল ধারণায়, আলোঅন্ধকারের শূন্যতায়, শূন্য আঁকি অবিরত....

তুই এইসব হয়ত কোনদিন জানতে অজানার গহনে বীজ পুঁতবি!
অসহনীয় সীমান্তে অনন্ত সময়কে বাধার কথা হাস্যকর বলবি!
অতীতের নিম ডালে মৌনতার চিহ্ন মুছতে নীলখামে লেবু চায়ের নিমন্ত্রণ দিবি বিষন্নতা'র ধুলোরঙ মুছিয়ে!
তবুও সাধন সম্পূর্ণতার আড়ালে-
আমি কিন্তু শেষ পর্যন্ত হেরেই যেতে চাই।

উপেক্ষার টপকানো প্রাচীরে তোর জন্যেই থাক সমতা, আর মধ্যরাতের প্রাচীনতর যোগফল।হিসেবের মানচিত্রে
আলোলাগা থেঁতলানো সিগ্ধতা থেকে মরে যাওয়া ইচ্ছেমতি!এক মনখারাপের বেসুরো সঙ্গীত.....

তোর মুঠো মুঠো অজ্ঞাতনামা!আমার  সংগ্রহে আত্মঘাতী বিশ্বাস,
যা আমাকে বারংবার হারতে প্রলুব্ধ করেছে আত্মবলিদানের স্বপ্নসন্ধানে!!
সময়েআর গতি ও বয়সকে শাসিয়ে কি বর্ণময় আমি হেরেছি...
চমত্কার! তোর স্বাদের থেকে পারকতা বেশি......
উপলব্ধির চিরন্তন কড়াই আর গন্ডাই.....

তোর ভালোথাকা সেতো কোন মিথ্যে নয়?তুইতো ভীষন ভাবে আছিস, ভালোথাকার স্বপ্ন লেপটে দিয়ে- ভেজাভেজা মেঘে।শিশিরের-
বিন্দুর ধুসর আবাহনে.......
নিজেকে প্রকাশ না করে, উপেক্ষার মধ্যেও সংবর্ধনার টিপ্পনী-চোরকাঁটা'র বেদনায় উপশম রোহিত স্বপ্নের সাহসিক লেনদেনে।আর আমি আজও এসব সহজ,সহজিয়ার অবগাহনে স্বাভাবিক হেরেছি,হারের মিটমিটে অজুহাতে হাত না রেখে...


২।

যে মেয়েটি বসন্ত উৎসব, শোভাযাত্রায় আবির আর গান||রঙ কোথায়, রঙ কোথায় সেদিনের পলাশ আর হলুদ পাখির অবদান||আমিও তখন রাস্তার ছেলে, রাস্তার বিষন্নতা দাউদাউ শব্দের দান||ঝলমলে বাসন্তিচর্চা হলুদ শাড়ি, সাদা পাঞ্জাবির বহুমূল্যতায় ভীষন বেমানান||শুনেছি দূর,দূরতর সমুদ্রতীর অচেনার বসবাস||জল ছলছল খামখেয়ালি ক্যানভাস, এই রোদ সেই বৃষ্টি টলোমলো আকাশ


৩।

নিবিড়তর প্রেম সিক্ত যাপনে-
শুধুই প্রতীক্ষা থাকে?
ভুল জেনেছ!
সব,সবটাই...
অবোধ যেমন!
ভীষন অবাঞ্ছিত,
কদিন আগেও যা বেশ-
গোলাপের অনুভূতি,পবিত্রতা অগাধ, শাশ্বত বোধের আলোকিত লাবণ্য।
দেখেছো কি আশ্চর্য আজ কেমন-
নিছকই মাংসের দলা!

বিশ্বাস আততায়ীর চোখ;
এমনই সুন্দর হয়।
উচ্চরণ রোহিত সঞ্চয়ের অর্ঘ্য-
সাধনের সিদ্ধি,প্রেমিকেরা
পরিতাপ জেনেছে...
তুমিও সব,সবটুকুই সুন্দর-
যেদিন দেখবে অমন,
জেনো তা তোমারই নবজন্মের আয়না।


গোলাপ নয়,মাংসের দলা নয়-
তুমি,তুমিই সেই কুসুমবনের সনাতনী....

৪।


কাল অংশত সমর্পণ বিষয়ক বোঝাপড়া
আর শব্দমিছিলের কুশীলব সামাল রাত....এমন নৈসর্গিক জোছনায়
ভেজা মন কেমন নাক্ষত্রিক আবাহন।
জিয়ানা তোকে তোর মত করে মনে পরেছে....

খামখেয়ালি লাগামহীন মুঠো ভর্তি অসুখ অন্য হাতে নিজেকে চেপে ধরে;
বলেছি মিথ্যে,মিথ্যে, সব.....
সবটাই মিথ্যা....
এতগুলো হাউহাউ আলোঅন্ধকার আকসা অন্তঃপুর- লেনদেনে ভেসে ভেসেই গেছে!
অনন্ত প্রতীক্ষার বর্ণমালা.....
শেষপর্যন্ত পথ ভুলে তবুও আসবে কখন??
ছাইও আসেনি!
শুধু বোবা আকাঙ্ক্ষার নৈমিত্তিক অপচয় মনপুর ইচ্ছামতির জলতরঙ্গে তন্নতন্ন এই বিপুল পৃথিবীতে অকারণ আসাযাওয়া...


৫।


বিকেলের আলোছায়ার নির্জন দিঘির রঙমহল কবেকার তন্নতন্ন, অন্যদিনের মত আজকাল আর হয় না!
রাতের অন্ধতার অন্তঃপুরে নিটোল প্রশ্রয়ের অংশত শ্রীরাধা,কারুকার্যে   তোমার কাজল অভিমানে রেণু রেণু অভিসার নৈসর্গিক অবগাহন....
আমাদের মগ্নতা আর নীরবতা মধ্যকার  একান্নবর্তি মনখারাপের সঙ্গীত,
দৈনন্দিনের বাজারের থলে,বাবার প্রেসারের ট্যাবলেট,ভুলে ভুল কিস্তিমাত।

তোমার অশেষ আনমনা বোঝাতে মৃত্যু মুগ্ধতা, কাঙ্খিত অক্ষরের সন্ধানে হাজার বছরের জরাজীর্ণ থেকে শব্দ উঠে আসে!! দৃশ্যতই সবই যৌবনের দেনা বিষয়ক ফসল সমূহ.....
শব্দেনা,অক্ষরেনা,তোমার সব অনুভূতি আমার সঙ্গীত: সাধনের সঙ্গীত।

কতদিনের কথা এইভাবে টুপটাপ ঝরে পরা তোমার সম্পূর্ণতা,নৈমিত্তিক অনুরাগ ছাইরঙা আবেগ'নিষ্ঠ এক শূন্যতা।
তুমি যতটুকু বিশ্বাস জেনো, মন বোঝায় বিশ্বস্ত আত্মঘাতী,গ্লানি অবশিষ্ট অন্তরপুর নয় শব্দের অপচয়......

এইখানেই রইলো জীবিত জীবন,কেননা জেতা যে সহজ কি কঠিন হেরে থাকা... একবার করুণা সরিয়ে দেখলেই সমূহ স্নিগ্ধতা গাঁথা....
ভালো করে দেখো সবটাই নয় অলীক,
আসলেই মেঘ'দুপুর আর রোদ্দুর চিলেকোঠা.....



Previous Post Next Post