দীপুমালা



রাঙা প্রভাত


তিলোত্তমা ঢাকা শহর
ফুটপাথ থেকে সূর্য, উঁচু উঁচু ইমারত ছুঁয়ে
আরো উঁচুতে চলে যায়
নীলরতন সাহেব খুব সকালে চলেছেন অফিসে
খুব দ্রুত হাটছেন, ঢাকার রাস্তায় খুব জ্যামের ঝামেলা
সকাল সকাল একটা বাসে চড়ে বসেছেন।

বাসের জানালা দিয়ে নীলরতনের চোখ
দূর থেকে অনেক দূরে
কিন্তু হঠাৎ তার দৃষ্টিতে স্পষ্ট হতে থাকে
একজন যুবক দৌড়াচ্ছে
প্রান ভয়ে দৌড়াচ্ছে;
তার পিছে ধাওয়া করছে চার/পাঁচ জনের একটি দল
এক সময় ছেলেটা বাসের সামনে এসে
হুমড়ি খেয়ে পড়ে গেল;
বাসটাও ব্রেক কষে থেমে গেল।

পড়ে যাওয়া ছেলেটার পাশে পড়ে থাকা
ইট দিয়ে- ধাওয়া করা ছেলেরা একের পর এক
আঘাত করতে থাকলো
সেকি ভয়াবহ দৃশ্য, তার মাথা থেকে
-ফিনকে দিয়ে রক্ত বের হতে লাগলো;
কেউ কিছু বললো না
কেউ এগিয়ে এলো না
শুধু সবাই, তাকিয়ে তাকিয়ে দেখলো।

নীলরতন বসে থাকতে পারলো না;
সে বাসের সিট থেকে উঠে
ভীর ঠেলে এগিয়ে আসতে থাকলো,
ছেলেটাকে বাঁচাবে বলে;
লোকেরা তাকে বাস থেকে নামতে দিল না।
ভাই চুপ থাকেন
ঝামেলায় জড়াবেন না;
হঠাৎ ড্রাইভার, তার বাস
খুব দ্রুত চালাতে শুরু করলেন।

নীলরতন নিজেকে খুব অপরাধি ভাবতে লাগলো
সে নিজেকে ক্ষমা করতে পারলো না
একটা তরতাজা যুবককে বাঁচাতে পারলো না!
মানুষ এমন হয়; এরা কি মানুষ?
সবার সামনে দিবালোকে কেউ কাউকে এভাবে
নিসংশভাবে হত্যা করতে পারে?
এরা মানুষ? নাকি পশু; নাকি অন্য কিছু;
নীলরতন কি করবে, কিছু বুঝে উঠতে পারছে না
কোন সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না
তার হাত, পা থর থর করে কাঁপছে
মানুষ এমন হয়! ভাবতেই পারছে না;
কিন্তু তাই হচ্ছে-
দেশ জুড়ে, শহর জুড়ে,
গ্রামের পর গ্রাম জুড়ে।

এই স্বাধীন দেশে
এই ভাষার মাসে
প্রভাতে, রক্তে রাঙালো পিচ ঢালা পথটা।



Previous Post Next Post