হলুদ প্রজাপতিটা উড়তে উড়তে ছুটে চলেছে গ্রামের শেষ প্রান্তের দিকে যেখানে,তিরতির করে বয়ে চলা নদীটার সরু একটা শাখা ঢুকে পড়েছে গ্রামের ভিতর। গ্রীষ্মকালে নদীর এই অংশে হাঁটুর নিচে জল থাকে।এখন ভরা শ্রাবণে নদী একেবারে টইটুম্বুর। গ্রামের লোক চাঁদা তুলে নদীর পাড়টা বাঁধিয়ে নিয়েছে।ঘাটের পথের দুইধার রফিক চাচা নিজের হাতে ফুলের গাছ দিয়ে সাজিয়েছে। বর্ষায় গোলাপী,সাদা নয়নতারা থোক থোক হয়ে ফুটে আছে। হলুদ প্রজাপতিটা উড়ে এসে বসলো একটা সাদা নয়নতারা ফুলের উপর। চৈতি সেই কখন থেকে প্রজাপতিটার পিছন পিছন ছুটছে। সারা দিন শুধু এই করেই বেড়ায়। ওর মনটা প্রকৃতির মতই উন্মুক্ত যেন। অলীক কল্পনার জাল বোনে আর তার খোঁজে বেরিয়ে পড়ে বাড়ি ছেড়ে। কতবার ঐ নদী পাড়ের যাযাবরদের সাথে বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছে। অবশ্য প্রতিবারই দু-তিন দিনের মধ্যেই বাড়ি ফিরে এসেছে।কখনও নিজেই এসেছে আবার কখনও ফিরিয়ে আনা হয়েছে। প্রজাপতিটা ফুলের উপর বসতেই ও সেটাকে খপ করে ধরতে গেল,কিন্তু প্রজাপতিটা ফুরুত্ করে উড়ে গিয়ে বসল আরেকটা ফুলের উপর। আবার সেটাকে ধরতে যেতেই আবার সেটা উড়ে পালাল। এবার ওর ভারি রাগ হল। মনে মনে বলল---‘ধরা দিলে কি তোর রূপ জ্বলে যেত?—না আমি তোকে বন্দি করতাম? ---আমি তো শুধু তোকে একটু আদর করতে চেয়েছিলাম’। প্রজাপতিটা যেন ওর সাথে খেলায় মেতেছে। যেন ওকে দেখিয়ে দেখিয়ে এ ফুল থেকে ও ফুল মধু খেয়ে বেড়াতে লাগলো। হঠাৎ কোথা থেকে একটা কালো কঠিন হাত এসে খপ করে হাতের মুঠোয় পুরে ফেললো প্রজাপতিটাকে। চৈতি আঁত্কে উঠলো,বিস্মিত চোখে তাকিয়ে দেখল, সামনে দাঁড়িয়ে একটা ছেলে। একটা গেরুয়া রঙের কাপড় লুঙ্গির মত করে পড়ে আছে। সেটা হাঁটু পর্যন্ত ঝুলছে। গায়ে একটা জংলাছাপ ফুলহাতা জামা। মাথায় বড় বড় উসকো-খুসকো চুল,মুখ ভর্তি দাড়ির জঙ্গল। গলায় লাল-নীল-সবুজ পাথরের মালা।পোশাকে চিমটি কাটলে ময়লা উঠে আসবে যেন। গায়ে অদ্ভূত একটা গন্ধ। ছেলেটি হাতের মুঠোয় চেপে ধরা প্রজাপতিটা এনে ধরল চৈতির মুখের সামনে। বলল—‘লে, লিয়ে যা। ইহাক তুহার। তু লিয়ে যা’। ---চৈতি ভয়ে চোখ বন্ধ করে দিল। ছেলেটি বলল—‘ডর মাত্, হামি লখাই আছি’। হাতের বাঁধন আলগা হতেই প্রজাপতিটা উড়ে পালাল। চৈতি মুখে হাত দিয়ে অদ্ভূত একটা আওয়াজ করে ছুটে পালাল।
সেই কখন ঘরে এসে ঢুকেছে এখনও ঘর থেকে বেরোয় নি। এই মাটির ঘর জুড়েই রয়েছে ওর জগৎ। বাড়ির উঠানের অপর পাশে অতবড় পাকা বাড়িটা ওর একে বারেই পছন্দ নয়,ওর কেমন যেন দম বন্ধ হয়ে আসে ওখানে গেলেই,মনে হয় ও যেন বন্দি। ওর একান্ত নিজের জগতে মাঝে ছোট্ট কাঠের চৌকিটাতে শুয়ে শুয়ে ও ভাবতে থাকে কিছুক্ষণ আগেই ঘটে যাওয়া ঘটনাটার কথা।চোখের সামনে ভাসতে থাকে ঐ ছেলেটার কালো পুরু ঠোঁটের ওঠা-নামা। আগে এমন কখনও হয় নি! চৈতি ওর অদ্ভূত নিরীক্ষণ ক্ষমতার জোড়ে মানুষে ঠোঁটের নড়াচড়া দেখেই বুঝে নিতে পারে ভাষা,অথচ আজ ঐ ছেলেটার ভাষা ওর কাছে দুর্বোধ্য মনে হচ্ছে।নিজের অক্ষমতায় নিজের উপর রাগ হচ্ছে ওর। সব থেকে আশ্চর্য লেগেছে ওর প্রজাপতি ধরার দক্ষতা দেখে। সেই ছোটো থেকেই ও বনে –বাদারে ঘুরে বেরায়,মোরোগের পিছনে ছুটে মোরগও ধরেছে কতবার,ও জানে প্রজাপতি ধরা কত কঠিন। অথচ ছেলেটা একবারে চেষ্টায় কেমন খপাত্ করে প্রজাপতিটা ধরল!ছেলেটির অপরিচিত ভাষা যেন চৈতির মনে অদ্ভূত এক রহস্য সৃষ্টি করেছে।
[২]
প্রজাপতিটা উড়ে যেতেই মেয়েটা ছুটে পালাল যে পথে,লখাই সেই পথের দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে রইল উদাস চোখে। আজ দিনটা ওর মোটেই ভালো যাচ্ছে না।এখানে তাঁবু ফেলার পর থেকে বেশ কয়েক দিন ধরে অনেক পাখি ধরে ছিল। ওরা স্থায়ী পৃথিবীর অস্থায়ী বাসিন্দা ঘর নেই,দুয়ার নেই,দুটো বাঁশের ঠেকনা দিয়ে তাঁবু খাটিয়ে ওদের সংসার। তার মধ্যেই বেড়ে চলে ওদের সংসার।দলবেঁধে এ দেশ থেকে ওদেশ ঘুরে বেড়ায় ওরা। নিদৃষ্ট কোনো রোজগারও নেই। জঙ্গলের পশু মারে,পাখি ধরে গ্রামে গ্রামে বিক্রি করে,কেউ সাপের খেলা দেখায়,আবার কেউ শহরে গিয়ে লোক ঠকায়।
আজ লখাই একঝাঁক বুনো পাখি নিয়ে এসেছিল এই গ্রামে।জল খেতে নদীতে নেমে ছিল।ফিরে এসে দেখে খাঁচার মুখ খোলা আর সব পাখি উড়ে গেছে। তাই তো অমন বিষন্ন মনে বসে ছিল নদীর ঘাটে।দলের সর্দারের একমাত্র ছেলে ও হয়তো পয়সার প্রয়োজন ওর নেই,কিন্তু মনে বড় সখ শাদি করে ওর বহু কে গহনা দিবে,ঘাগড়া দিবে। ওর বাপু ওকে অনেক কিছু শিখিয়েছে।কি করে সাপ ধরতে হয়,পাখি ধরতে হয়,পতঙ্গ ধরতে হয়।আরও অনেক তন্ত্র-মন্ত্র ভি শিখিয়েছে। ও বিটিছেলে কে বশ করতেও পারে। রাঢ় বাঙলার এই অঞ্চলে প্রতি বছর শ্রাবণ সংক্রান্তিতে দেবী মনসার পূজা হয়, ‘ঝাঁপান’ হয়। ওর বাপু আরেক গোষ্ঠীর কাছে খবর পেয়ে এই বার এখানে এসেছে। এবার ঝাঁপানে লখাই সাপের খেলা দেখাবে। আর ক’দিন বাদেই ঝাঁপান,তার বাদে ভাদু পূরণমাসের দিন লখাই লগন করবে। তারপর ওরা আবার তাঁবুগুটিয়ে পাড়ি দেবে নতুন দেশে।
লখাই এর হঠাৎ মনে হল মেইয়েটা হঠাৎ উকে দেখে পালাইল কেনে? —ও ছুটে নেমে এলো নদীর কাছে,জলের উপর পড়া নিজের প্রতিবিম্বটা কে ভালো করে দেখল,তারপর হে-হে করে হাসলো...। মনে মনে বলল— ‘বাঃ! হামাকে তো বহত সুন্দর দিখাইছে’।
অন্যদিন লখাই এর সাথে যার বিহা হবে— সেই কুনারের বিটি দুধিয়া আসলেই লখাই ওর সাথে কত মস্করা করে।কিন্তু আজ যেন ওর মন নাই। দুধিয়া এসে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে লখাই কে,বলে---কা বাত রে,তু কাহে মুঝসে দূর ভাগতি? হামার পাশ আ, হামি তোকে আদর দিবে সোহাগ দিবে,তু য্যাইসে চাহে তুঝে প্যার দিবে’। লখাই এক ঝটকায় ঘুরে গিয়ে দুধিয়ার হাতটা মুচরে ধরে বলে—‘যা ভাগ হিয়াসে,কাহে পরসান করতি?’ দুধিয়া যন্ত্রণায় মুখটা বকৃত করে হাতটা ছাড়িয়ে নিয়ে বলে—‘বোল না,কামাচ্ছা মায়ী কি ----দুধিয়ার কথা শেষ হওয়ার আগেই লখাই দুধিয়ার হাত ধরে ওর তাঁবু থেকে বার করে দেয়।
[৩]
শীত-গ্রীষ্ম-বর্ষা কোনো ঋতুতেই চৈতির নদীতে স্নান করা বাদ যায় না। গ্রীষ্মে হাঁটু জলেও পাঁকের মধ্যে পা ডুবিয়ে ডুবিয়ে মাঝ নদীতে গিয়ে স্নান করে। বর্ষায় পাড়ের কাছে এলেই জল পাওয়া যায় তাই বর্ষায় চৈতি জল পরী দের মত অনেক্ষণ জলে ডুবে থাকে।কিন্তু সেদিনের পর থেকে ঘাটে এলেই চৈতির মন যেন উদাস হয়ে যায়।সকলের অলক্ষে চোখ যেন কি খুঁজে ফেরে। আজ চৈতি ঘাটে একাই স্নান করতে এসেছে। জলের মধ্যে পা ডুবিয়ে বসে আছে। তাকিয়ে আছে ঐ দূর আকাশে ভেসে থাকা চিল গুলোর দিকে।এতটা দূরত্ব যে ধরা- ছোঁয়ার বাইরে।চৈতির মনটাও এমনই একটা উন্মুক্ত আকাশ খোঁজে। বারে বারে মনে হয় পরিযায়ী পাখির মত বাসা বদল করতে। যেমন শীতের শুরুতে এই নদীর ধারে গাছে গাছে ভিড় জমায় কত নতুন পাখিরা! আবার শীত শেষ হতেই কোথায় যেন হারিয়ে যায় ওরা। গ্রামের শেষ সীমানায় বাসা বেঁধেছে যাযাবররা,গ্রামের লোক ওদের বলে হা-ঘরে। ওরা নাকি চুরি করে! চৈতি ধীরে ধীরে নেমে পড়ে জলে।
ঘাটের অদূরেই ফুলের ঝোঁপের আড়াল থেকে দুটি চোখ ওর অলক্ষে ওকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিটে বিদ্ধ করতে থাকে। চৈতির নিটোল শরীরে জলের ছোঁয়া লাগতেই আরও যেন লখাই এর মনটা চঞ্চল হয়ে ওঠে। ওর সিক্ত মুখটা যেন আরও সরলতায় ভরে ওঠে। স্নান করে ঘাটে উঠতেই লখাই ছুটে এসে ওর হাতটা চেপে ধরে। মুখের দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞাসা করে---‘এ লেড়কি,তুহার নাম কিয়া? —হামি তোকে বহুত প্যার করে,হামি তোকে ঘর লিয়ে যাব’। চৈতি সেই একই দৃষ্টিতে ওর দিকে তাকিয়ে ওর ঠোঁট দেখে ভাষা বোঝার চেষ্টা করে। ওর চোখের দিকে তাকাতেই ভিতর পর্যন্ত যেন শিরশির করে ওঠে। অদ্ভূত এ ছেলের ভাষা,অদ্ভূত এর দৃষ্টি যেন চৈতির বক্ষ ভেদ করে ভিতরে পৌঁছে গেছে। কিন্তু কিছুতেই বোঝে না এই ভাষা—কী ভীষণ দুর্বোধ্য! চৈতি হাত নেড়ে কত কি যেন বলে। ছেলেটা কিছুই যেন বুঝতে পারেনা। শুধু ভাষাহীন দুটি চোখ একে অপরের সাথে কথা বলে চলে।
[৪]
শ্রাবণী পূর্ণিমা,আর একটু পরেই চাঁদ উঠবে। চৈতি ঐ গভীর চোখের চাউনিতে ধরা পড়েছে। ঘাটের সিঁড়িতে বসে দেখছে ধীরে ধীরে সূর্যটা কেমন ঢলে পড়ছে দিগন্ত রেখার কোলে।ঠিক ঐ ছেলেটা যেমন ঢলে পড়ে ওর কোলে।রাত নিশুত হলে সে ওকে যেতে বলেছে বড় নদীর চড়ে। বলেছে কাহ্নার মত বাঁশি বাজাবে।চৈতি অনুভব করবে সে বাঁশি।
মধ্য রাতে চুপিসারে চৈতি চলছে অভিসারে। পড়নে জংলাছাপ শাড়ি। শ্রাবণে নদীর চড় জলের তলায়। লখাই গাছের খুঁটির উপর মাচা বেঁধে,তার উপর বসে এক মনে বাঁশি বাজাচ্ছে। চারিদিকে জ্যোৎস্নার আলো লুটোপুটি খাচ্ছে। যেন লখাই এর বাঁশির সুরে আনন্দ লহরী ছড়িয়ে পড়ছে সমস্ত প্রকৃতি জুড়ে। চৈতি ধীর পায়ে এগিয়ে আসে লখাই এর কাছে। জলে পা পড়তেই ছলাৎ করে শব্দ হয়। শব্দরোহিত জীবনে চৈতি শব্দের জাদু জানে না,লখাই ঘুরে তাকাতেই অবাক হয়ে যায়।ভাবে এ বুঝি মনের টান। চৈতির ছড়ানো কোলে মাথা রেখে শুয়ে তাকিয়ে থাকে চাঁদের দিকে। চৈতি কোমরে গোঁজা চিরুনি টা বার করে চাষ করতে থাকে লখাই এর অবিন্যস্ত-রুখু-তেল-জল হীন চুলে। হঠাৎ লখাই বলে ওঠে---‘ এ লেড়কি, তু হামার সাথ লগন করবি? হামি তুহাক আদর দিব’। ---চৈতির সমস্ত মুখ জুড়ে ছড়িয়ে পড়ে মায়াবী হাসি। ---‘তু হামার বেটার মায়ি হবি,উহাক দুধ পিলাইবি,আদর করবি’। –সামান্য থেমে আবার বলে—‘তু হামাকে ভি আদর করবি,সোহাগ করবি,ঘর বানাইব---তু যাবি হামার সঙ্গ’? আবেশ বিভোর চৈতি ধীরে ধীরে সামনের দিকে মাথা ঝোঁকায়, চোখের সামনে ভেসে ওঠে নতুন এক উন্মুক্ত জীবনের স্বপ্ন। চৈতির কোল থেকে উঠে বসে লখাই। চাঁদের রূপোলী আলোয় যেন স্নান করছে চৈতি। লখাই এর মনে হয় যেন ওর সামনে কোনো লেড়কি নয়,হুরী-পরী বসে আছে। মুখটা চৈতির কানের কাছে নামিয়ে এনে বলে—‘হামি তুহাক পিতলের গহনা দিব। হামার মায়ি পিতলের গহনা পড়ে। উ কুনারের বেটি পায়ে পিতলের মল পড়ে ঠুনক ঠুনক হাঁটে। ---উর সাথে হামার বিহা হবে ভাদু পূরণমাসিতে।চৈতির মুখে যেন আঁধার নেমে আসে। লখাই হা-হা- করে হেসে ওঠে। তারপর চৈতির থুতনিটা ধরে বলে---‘উ কুনারের বেটি হামে পসন্দ নাহি’। তারপর চৈতির অধরের কাছে এসে বলে—‘এ লেড়কি, তু হামার সাথ বিহা করবি তো?’চৈতির নরম ঠোঁট দুটো নদীর মত তিরতির করে কাঁপতে থাকে। নরম কপতীর মত পিষ্ঠ হতে থাকে লখাই এর বাহুর মাঝে। লখাই কোনো যাযাবর নয়,যেন অতি দক্ষ কৃষকে পরিণত হয়েছে।
[৫]
শ্রাবণ সংক্রান্তি,গ্রামের শেষ প্রান্তে চলছে ঝাঁপান। আশে-পাশের সব গ্রামের সাপুড়েরা এসেছে সাপের খেলা দেখাতে। লখাই এই প্রথম সাপের খেলা দেখাবে। সবার আগে ও চৈতির সামনে সাপ খেলা দেখাতে চায়,শুধু ওর প্রথম খেলা বলে নয়,ভাবতেই ওর শরম লাগে। ওর মায়ি বলে সাপ নাকি শুভ, সাপের আশির্বাদে বংশ বৃদ্ধি হয়। লখাই সাপের ঝোলা কাঁধে ঝোলায়,হাতে নাগের বাঁশি। তাঁবু ছাড়িয়ে রাস্তায় পা রাখতে যাবে—এমন সময় দুধিয়া সামনে দাঁড়িয়ে পথ আটকায়। আর মাত্র কটা দিন,তারপর ও লখাই এর বহু হবে,ওর বেটার মায়ি হবে।দুধিয়া পথ ছেড়ে লখাই এর বুকের উপর ঝাপিয়ে পড়ে। দুই বাহুপাশে লখাই এর গলাটা আবদ্ধ করে ওর চোখের দিকে তাকিয়ে বলে—‘ তু হামিকে নাগের খেলা দিখাবি লা?—তু তো হামার নাগর আছিস,হামিকে নাগের খেলা দিখা’। লখাই ঝটকায় সড়িয়ে দেয় দুধিয়াকে।
ঝড়ের বেগে সময় বয়ে যায়,এবার লখাইদের তাঁবু গোটানোর পালা। ভাদু পূর্ণিমার রাত। লখাই আর দুধিয়ার শাদি শেষে ওরা পাড়ি দেবে দূর দেশে। নতুন দেশ নতুন সংসার। কনে সাজে বসে স্বপ্ন দেখে দুধিয়া।
রাত গভীর,পূর্ণিমার আলোয় চিকচিক করছে ঢেউ তোলা নদীর জল,তালে তালে দুলছে দুটি ছায়া। মাঝ নদীতে নৌকা ভেসে চলেছে। –হাওয়ায় ভাসছে------‘এ লেড়কি, তু হামাকে একটা বেটি দিবি?’
Tags:
গল্প