রীতা ঘোষ

rita











প্রায় পঁচিশ বছর পর সেদিন হঠাৎ করে বাজারে দেখা। কলেজ জীবনের পর সেই যে ছাড়াছাড়ি, তারপর বিবাহ সূত্রে দুই আলাদা রাজ্যের বাসিন্দা । প্রথম প্রথম যোগাযোগ থাকলেও সংসারের চাপ বাড়ার সাথে সাথে তা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় ।

পলির বর ট্রান্সফার হয়ে কোলকাতা এসেছে। একটা মাল্টি ন্যাশন্যাল কোম্পানিতে উঁচু পোস্টে আছে। প্রায়ই ট্যুরে যেতে হয় । দুই ছেলে মেয়ে হাইয়ার স্টাডির জন্য বিদেশে। একাকীত্ব প্রতি মুহুর্ত ওকে দংশন করে। বছর দুই হলো শোভনের সাথে সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। স্বামীর অনুপস্থিতিতে প্রায়ই ওরা দেখা সাক্ষাৎ করে ও একত্রে সময় কাটায়। আজকাল ওর মন মেজাজ বেশ ভালো তাই ।

কথাটা শুনে একটু হকচকিয়ে যায় অলিভিয়া । ওর স্বামী এই দুবছর হলো বিছানায় । একটা রোড অ্যাক্সিডেন্টে গুরুতর আহত হয়ে কোমরের নীচের অংশ পুরোটাই প্যারালাইজড। ছেলেই এখন বাবার বিজনেস দেখাশোনা করে । অলিভিয়া এখনও বেশ সুন্দরী ও ইয়াাং । অনেকের অনেকরকম প্রোপোজাল পেয়েও কোনদিকে ভ্রূক্ষেপ করেনি। ভালোবাসার অভাব শরীর মনকে কুরে কুরে খেলেও , নিজেই নিজেকে সান্ত্বনা দেয় , " কতো জনের তো দুবেলা দুমুঠো অন্ন জোটে না , মাথার ওপর ছাদ নাই , তাদেরও কিন্তু চুরি করা পাপ , ক্ষমার অযোগ্য । আমার তো ভরা পেট , ভরা সংসার। নাহয় ভালোবাসার অভাব , তাই বলে ... "

চোখের জল লুকিয়ে একমুখ হাসি নিয়ে ব্যাগ থেকে নিজের কবিতার বইটা বের করে পলির দিকে এগিয়ে দেয় ...



Previous Post Next Post