রাত শেষে আসে ভোরের আভাষ, আর রোজ রোজ আমি ভাবি এই তো আর কিছুদিন পরে তোমার সাথে আবার দেখা হবে। তারপর, অপেক্ষায় থাকি। ব্যস্ত হই রোজকার একঘেয়ে হয়তবা কখনও কখনও বেশ মজাদার কাজে। অবসর ঘোরে আশে পাশে। আর আমি মনে মনে ভাবি এই বুঝি মুঠোভাষে ভেসে এলো তোমার কণ্ঠ।
মুঠোফোন হাতে নিয়ে বসে থাকি সেইখানে, সেই যে যেখানে কমলা রসে রাঙা সকালে শিউলির বোঁটা ধুয়ে রোদ এসে পড়ছে। একটা একটা করে দিন গড়িয়ে সন্ধ্যে ধুয়ে রাত জাগে। বুঝতে পার কি, একটু একটু করে আমি তোমার মাঝে নিজেকে হারাই? হাতের তালুর দিকে চেয়ে থাকি কতক্ষণ, কোন রেখা ধরে তুমি এলে আমার জীবনে, যদি একবার খুঁজে পাই।
আজকাল তোমাকে নিয়ে, বড় বেশী চিন্তা করি, অবশেষে মন খারাপ হলে অবহেলে উঠে যাই সিঁড়ি দিয়ে ছাদের কোনায়। ছাদটুকু না পেলে বড় অসহায় লাগে। তখন কোনা খুঁজি একটা, না পেলে নিজের থেকে নিজেকেই একলা রাখি, আগল তুলি চারপাশে।
মাঝে মাঝে শব্দেরা যখন ছেড়ে যায় আমায়, ঠিক জানি তখন তারা ভেসে গিয়ে তোমায় ধরে জড়িয়ে। তাই আমি অপেক্ষায় থাকি। তোমাকে ছুঁয়ে ফিরুক তারা, আমি ঠিক চিনে নেব, অনুভবে, গন্ধে। বৃষ্টির ফোঁটায় ফোঁটায় দাগ কাটে কাঁচ রঙা চোখে,ভেজা গন্ধে ধুয়ে যায় চুল, কোন এক দামাল হাওয়া এসে মন টেনে নিয়ে যায় তোমার কাছে শরীরের আবরণ ফেলে।
প্রশ্নেরা ভিড় করে, ধীরে ধীরে ঘিরে ধরে আমায়, চোরাবালি আস্তে আস্তে ডোবায় আলো, দমবন্ধ হয়ে নিশ্বাস আটকে থাকে বুকের নিচে। তবু আমি চেয়ে থাকি, বিশ্বাসটুকু দু হাতে আঁকড়ে ধরে জানলার দিকে শব্দদের ফেরার অপেক্ষায়।
হয়তো স্বচ্ছ আলো রং ভালোবেসে ভয়ানক বিষন্ন হয়ে যাই আর ঠিক তখনই হঠাৎ হঠাৎ শব্দ হারাই, বাক্যের মাঝ পথে চুপ করে যাই, যত দিন এগোয় তত বেশি করে এ অভ্যেসের পুনরাবৃত্তি হয়। ভয় হয় যদি ভুলে যাই কথা বলা। তাই আমি রোজ রোজ তোমার অলক্ষে তোমার সাথে কথার মহড়া দিই।কিন্তু তোমার সাথে কথা বলার সময় সব শব্দগুলো কখন জানি নীল রঙের প্রজাপতি হয়ে উড়ে যায় অজানায়।
মাঝে মাঝে সেই চেনা স্বপ্নটা আজকাল ঘুমোলে আসেনা আর, রাতজাগা চোখের পাতার স্বপ্ন খুঁজে ফিরি তখন। তাই রোজকার কাজ-অবসরে-ভিড়ে-একলায় আমি রোজনামচায় ব্যাস্ত থাকি সূচীপত্র ধরে যন্ত্র মানুষ হয়ে।
Tags:
মুক্ত গদ্য