মৌ দাশগুপ্ত

moudasgupta













কবিতায় কোলাজ অথবা কোলাজে কবিতারা




(১) শূণ্য

এভাবেই মুছে যাচ্ছে সব।
শহুরে পরিযায়ী বিলাসিতা  মিলিয়ে যাচ্ছে জলছবির তরঙ্গায়িত স্পন্দনে,
কিশোরীর কাঁচের চুড়ির ঠিনঠিন আওয়াজ উড়ে যাচ্ছে মোবাইল রিং টোনে,
মানবিক আলোছায়া সম্পর্কেরা আবছায়ে আবডালে বিকিয়ে যাচ্ছে বিপননের কাছে।
জীবনখাতার সাদা পাতায় পাঁচ দুগুনে দশের এক মুছে পড়ে থাকছে শূণ্য।

(২) বনসাই মুহূর্ত

যে বনসাই রাস্তায় বসন্তেরও ছায়া পড়েনা,
যেখানে আবহাওয়া সমাচার চরম স্বৈরাচারী-
যেখানে মুঠো মুঠো সময়  জমাট বাঁধে আলোর বৃত্তের বাইরে,
সেখানেই কোনো কোনো অলস মুহূর্ত জুড়ে খসে পড়ে সব মুখোশের আবরণ
অশ্রুমতী স্মৃতির খোলস, হয়তো বা আমিত্বও ..

(৩) কবিতার জন্মকথা

আজও আঙ্গুলগোণা সময়ে ছায়াপথ ধরে হেঁটে যাই সুর্য্যোদয়ের পথে,
অপর্যাপ্ত বিরহের ধোঁয়াশা সরিয়ে বেছে নিই অরণি-সন্ধ্যার ঝাঝালো সাঁঝের তারা ,
আয়নার প্রতিবিম্বে চিনে নিই অচেনা নাভিবাঁক, গভীরতম কন্দরের স্বেদবিন্দু।
ভালোবাসার স্পন্দনে- ডুব ডুব চুমুকে জীবনের গল্পগলো ফুল হয়ে ফুটে ওঠে,
গল্পের সব ফুলেই গন্ধ হয়ে জড়িয়ে থাকে এক একটা পোয়াতি কবিতার জন্মকথা ।

(৪) বয়েই গেছে

তুমুল মন খারাপ, অভিমানে দৃষ্টিপাড় হারানো কবিতারা,
ইগোর বিস্ফোরণে ছিন্নভিন্ন আগোছালো প্রেম,
ব্রেকআপের সম্ভাবনায়- 'আমি তুমি' কাটাতারের সীমানায়,
রিং টোনে “ তোমার ডাকে সাড়া দিতে বয়েই গেছে'...

(৫)  জন্ম

খোলা ডেক্সটপে পুড়ছে জলন্ত দুপুর, একাএকা…
চোখের জলদাগে সমান্তরাল দুই নদী,
আধুনিকার চর্যাপদের পাতায় শুধুই সংকেতনির্মাণ ।
কাজলমোছা কান্নায় ওয়ার্ড ফাইল জুড়ে পদাবলী   ।

(৬) ব্যাবধান

রাধাদিন আর কৃষ্ণরাতের ব্যাবধান কয়েকটি হলুদ পাতা মাত্র,
অরণি সময় শুধু জানে গোধুলিবেলার রহস্য।

(৭) ধারামতী

আমার গল্পে কোন কৃষ্ণ নেই..নেই একপেশে বিরহের বিলাসিতা...
কাজলধোয়া জলে নেই কোন কালো কি নীল রঙ...
ধারামতী মান অপমান সুখ দুঃখেরা স্রোত বদলায়...
সময়ের সাথে ধারা থেকে রাধায় সেজে উঠি...



Previous Post Next Post