রাইসা যিশা

raisajisha

স্কুলের পরীক্ষায় গাড়ি আঁকতে গিয়ে, ফ্রন্ট-ভিউ থেকে হেডলাইট দুটোই দেখা যাচ্ছে এমন ছবি আঁকতে গিয়ে খুব গলদঘর্ম হচ্ছিল মেয়েটি।  বলি, 'সাইড থেকেই এঁকে দাও, একদম সোজা কাজ।  চিন্তিতমুখে কিছুক্ষণ তাকিয়ে জানালো, ' নাহ্, সামনে থেকেই আঁকি। '  অনেক ধকল সামলাতে হয়েছিল ক্লাস টু-তে পড়া যিশাকে।  'এটা হলো, থ্রি ডাইমেনশন,' আমি বোঝাই, 'আলোটা ঠিকমতো ফেলো, পেন্সিল দিয়ে।

বড়ো হয়ে ও আমার আঁকা ছবির দিকে তাকিয়ে শ্বাস ফেলে বলে, 'রেস্ট ইন পিস পারস্পেকটিভ '।  আমি মন খারাপ করি, ও বলে, 'এটাকে তুমি ডাইমেনশন দিয়ে বোঝাতে, আসলে এ হলো পারস্পেকটিভ '।  


হোমওয়র্ক, বাড়ির ড়্রয়িং -- এঁকে আমাকে জানালো, 'বাবা, আমিও কি এখন সেলিম আংকেলের মতো আর্কিটেক্ট হয়ে গেছি?' আমি হাসি।  কী বলব, অনেক বাচ্চা তো !  একদিন যিশা খুব মনোযোগ দিয়ে একটা চোখ আঁকে।  আশ্চর্য, চোখটা জীবন্ত চোখের মতো, তারায় নীল-গভীরতা !  আমি বলি, ' মা, আমাকে অ্যারিস্টটলের স্কেচ করে দিবি একটা?' ও আঁকে, কিন্তু ভাস্কর্যের আদলে চোখের মণি দেয় না, বলে 'এভাবেই সুন্দর, বাবা ' । 


'রাইসা যিশা, তুই যে আঁকলি, তোর সম্পর্কে কিছু বলতে হয় যে !  তোর ভাব-লক্ষ্য, পদ্ধতি কী, স্কেচগুলোর সাইজ কেমন .., আমি একটু হেসে ওকে বলি।  নিস্পৃহভঙ্গিতে বলে, ' আমার কোনো তেমন লক্ষ্য সামনে রেখে আঁকিনি, লিখে দিয়ো।  আঁকতে ভালো লাগে, তাই আঁকি।  যতদিন ভালো লাগে ততোদিন আঁকব।  









স্কেচ করতে উপকরণ খুঁজতে হয় না, একটা কাগজ-পেন্সিল হলেই হয় '।  যিশার ঝোঁক পোর্ট্রেটে, মুখের অভিব্যক্তিতে।  প্রধানত, পেন্সিল-চারকোলে আঁকে চুলের ওপর আলো, শিশুর হাসির ঝঙ্কার।








এখন ও পড়ছে আর্কিটেকচারে, ঢাকার মিরপুরে মিলিটারি ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি-তে।  কাজের চাপে যখন ও আঁকতে পারে না, খুব মন খারাপ করে।




মুস্তফা কামরুল আখতার
রাইসা যিশা
পরিচিতি
পরিচিতি
Previous Post Next Post