দীননাথবাবুর সংসারটি ছোট। স্ত্রী অমিতা,ছেলে তনয় আর মেয়ে নন্দিতা, সাকুল্যে চারজন। ছেলেমেয়ে দুটোকে মনের মত করে বড় করে তুলেছেন অমিতাদেবী। মায়ের মতই সুন্দর দেখতে, স্মার্ট, বলিয়ে কইয়ে ,চৌখস, সমাজে পাঁচনের সাথে মিশতে পারে। স্ব্ল্পবাক রাশভারী দীননাথবাবু সন্তানদর নিয়ে বিশেষ উচ্চবাচ্য না করলেও সন্তান গরবে গরবিনী মা কিন্তু পাড়া প্রতিবেশী আত্মীয় স্বজনের সামনে সুযোগ পেলেই ফলাও করে ছেলেমেয়ের গুনকীর্তনে লেগে পড়েন।তনয় কলকাতার এক প্রাইভেট কলেজের লেকচারার, নন্দিনী প্রেসিডেন্সী কলেজে বোটানি নিয়ে পড়ছে সবে থার্ড ইয়ার। ছেলেমেয়েদের বিয়ে থা নিয়ে ভাবছেন অমিতাদবী, গুটিকয়েক সম্বন্ধও এসেছে। নন্দিনীর বিয়েটা নিয়েই মথাব্যাথা বেশী ওর মায়ের। নন্দিনীর পর তনয়ের পালা। অনেক কিছু ভেবে রেখেছেন অমিতাদেবী। বিশেষত ছেলের বউ নিয়ে অনেক স্বপ্ন রয়েছে ওনার।কিন্তু মানুষ ভাবে এক হয় আরেক।
চাকরী পাবার পর বছর ঘুরতে না ঘুরতে তনয় বিয়ে করল ওর সহপাঠি তথা সহকর্মী ভাবনাকে,দেখতে শুনতে চলনসই ভাবনার বাবা নেই। ছোটবেলা থেকে মামাবাড়ীতে মানুষ। অমিতাদেবী প্রথম থেকেই ভাবনাকে অপছন্দের তালিকাভুক্ত করে ফেললেন। ভাবনার হাঁটাচলা ছেলেদের মত, শাড়ি পরতে পারে না ঠিকমত, বিয়ের পরও চাকরী করে (কিনা, মায়ের খাইখরচা কে দেবে),রোজ অফিসফেরত বাপের থুড়ি মামারবাড়ী যায় মায়ের খোঁজখবর নিতে (কেন,ভাবনা না গেলে ওর মামা মামী কি ওর মাকে খেতে ঘুমাতে দেবে না?), ছুটিছাটায় তনয়কেও সাথে করে মায়ের কাছে নিয়ে যায়,( বিয়ের পরেও এত মায়ের জন্য আদিখ্যেতা কিসের), মা আর শ্বাশুড়ীর জন্য এক-ই গিফট কেনে,(মা আর শ্বাশুড়ী এক নাকি? রোজগারপাতি তো মায়ের ভাগে বেশী তবে শ্বাশুড়ীর গিফটের বেলায় আরো দরাজদিল হওয়া উচিত ছিল না কি? আসলে মেয়েটার রুচিবোধটাই ঠিক নেই), রান্নাবান্না জানে তবে সেরকম না, ডাল ভাত মাছতরকারি অবধি ঠিক আছে কিন্তু মোগলাই চাইনিজ বানাতে বললেই হাত তুলে দেয়,(কে আর শেখাবে? এতেই ঘরের স্ট্যান্ডর্ড জানা যায়), পূজাপাটের বালাই নেই, (সংস্কার বলে কিছুই জানে না), হাজার প্রশ্নেও সবিস্তারে উত্তর দিতে চায় না, খালি মুখ টিপে হাসে, (বোধহয় মাথায় ছিট আছে) ইত্যাদি ইত্যাদি। ঘরের কথাতো আর ফলাও করে বাইরে বলা যায়না তাই বাড়ীতেই গগরগজর করেন গিন্নী আর সব কথারই উপসংহার টানেন, “জানে না তো জানে না, আমার নন্দিনীকে দেখে তো শিখতে পারে।“ দীননাথবাবুর সামনে বললে স্বল্পভাষী গৃহকর্তা মৃদু হসেন।
কারণ এই ক’দিনেই উনি দেখে নিয়েছেন পুত্রবধুটি ওনার মতই স্বল্পবাক ও মৃদুভাষী। যাইহোক, এভাবেই কাটে দিন কাটে রাত। অবশেষে মনের মত রাজযোটক খুঁজে মেয়ে বিয়ে দিয়েছেন অমিতাদেবী। বিয়ের পর শ্বশুড়বাড়ী যাবার মুখে সে কি আকাশ-ভাঙা কান্না মেয়ের ! একবার মার বুকে, আর একবার বাবার বুকে,বাপেরবাড়ী ছেড়ে যাবার দুঃখ বেশী না মাকে ছেড়ে যাবার, কে জানে। কিন্তু যেতে তো হয়ই। নন্দিনীও চলে গেল নতুন মানুষের সাথে তার স্বপ্নের ঘরে ।ঘরতো ফাঁকা ফাঁকা লাগেই, আরো খারাপ লাগে যখন মেয়েটা বাপের বাড়ী থেকে শ্বশুরবাড়ী থাকাটাই বেশী পছন্দ করে, কালেভদ্রে নিয়ে আসলেও বরের অফিস, শ্বাশুড়ীর শরীর খারাপ, দেওরের কলেজ কি শ্বশুরমশাইয়ের রাগ করার অজুহাতে মেয়ের ফেরত যাবার ছটফটানিটা বড় চোখে লাগে।
এমনকি দ্বিরাগমনের পর আর বাপের বাড়ীতে রাত কাটায়নি মেয়ে।যখনই আসে জোড়ে আসে, মেয়েকে আর একা পাননা অমিতাদেবী। বাড়ী এলেই কলকলিয়ে মা-বাবার কাছে শ্বশুর-বাড়ির সবার প্রশংসায় পঞ্চ-মুখ মেয়ে, বাড়ীতে কে কেমন আছে জানতেও চায়না। । মা কিন্তু একান্তে ভাবেন বিয়ের পরদিন শ্বশুড়বাড়ী যাবার সময় মেয়ের সেই কান্না কোথায় গেল ! সেদিন রাতে কর্তাকে একা পেয়ে বলেই ফেললেন, “মায়ের ওপর মেয়ের টানটা ভাবনাকে দেখেও তো শিখতে পারত মেয়েটা!” দীননাথবাবু আজও মুচকি হাসলেন।
চাকরী পাবার পর বছর ঘুরতে না ঘুরতে তনয় বিয়ে করল ওর সহপাঠি তথা সহকর্মী ভাবনাকে,দেখতে শুনতে চলনসই ভাবনার বাবা নেই। ছোটবেলা থেকে মামাবাড়ীতে মানুষ। অমিতাদেবী প্রথম থেকেই ভাবনাকে অপছন্দের তালিকাভুক্ত করে ফেললেন। ভাবনার হাঁটাচলা ছেলেদের মত, শাড়ি পরতে পারে না ঠিকমত, বিয়ের পরও চাকরী করে (কিনা, মায়ের খাইখরচা কে দেবে),রোজ অফিসফেরত বাপের থুড়ি মামারবাড়ী যায় মায়ের খোঁজখবর নিতে (কেন,ভাবনা না গেলে ওর মামা মামী কি ওর মাকে খেতে ঘুমাতে দেবে না?), ছুটিছাটায় তনয়কেও সাথে করে মায়ের কাছে নিয়ে যায়,( বিয়ের পরেও এত মায়ের জন্য আদিখ্যেতা কিসের), মা আর শ্বাশুড়ীর জন্য এক-ই গিফট কেনে,(মা আর শ্বাশুড়ী এক নাকি? রোজগারপাতি তো মায়ের ভাগে বেশী তবে শ্বাশুড়ীর গিফটের বেলায় আরো দরাজদিল হওয়া উচিত ছিল না কি? আসলে মেয়েটার রুচিবোধটাই ঠিক নেই), রান্নাবান্না জানে তবে সেরকম না, ডাল ভাত মাছতরকারি অবধি ঠিক আছে কিন্তু মোগলাই চাইনিজ বানাতে বললেই হাত তুলে দেয়,(কে আর শেখাবে? এতেই ঘরের স্ট্যান্ডর্ড জানা যায়), পূজাপাটের বালাই নেই, (সংস্কার বলে কিছুই জানে না), হাজার প্রশ্নেও সবিস্তারে উত্তর দিতে চায় না, খালি মুখ টিপে হাসে, (বোধহয় মাথায় ছিট আছে) ইত্যাদি ইত্যাদি। ঘরের কথাতো আর ফলাও করে বাইরে বলা যায়না তাই বাড়ীতেই গগরগজর করেন গিন্নী আর সব কথারই উপসংহার টানেন, “জানে না তো জানে না, আমার নন্দিনীকে দেখে তো শিখতে পারে।“ দীননাথবাবুর সামনে বললে স্বল্পভাষী গৃহকর্তা মৃদু হসেন।
কারণ এই ক’দিনেই উনি দেখে নিয়েছেন পুত্রবধুটি ওনার মতই স্বল্পবাক ও মৃদুভাষী। যাইহোক, এভাবেই কাটে দিন কাটে রাত। অবশেষে মনের মত রাজযোটক খুঁজে মেয়ে বিয়ে দিয়েছেন অমিতাদেবী। বিয়ের পর শ্বশুড়বাড়ী যাবার মুখে সে কি আকাশ-ভাঙা কান্না মেয়ের ! একবার মার বুকে, আর একবার বাবার বুকে,বাপেরবাড়ী ছেড়ে যাবার দুঃখ বেশী না মাকে ছেড়ে যাবার, কে জানে। কিন্তু যেতে তো হয়ই। নন্দিনীও চলে গেল নতুন মানুষের সাথে তার স্বপ্নের ঘরে ।ঘরতো ফাঁকা ফাঁকা লাগেই, আরো খারাপ লাগে যখন মেয়েটা বাপের বাড়ী থেকে শ্বশুরবাড়ী থাকাটাই বেশী পছন্দ করে, কালেভদ্রে নিয়ে আসলেও বরের অফিস, শ্বাশুড়ীর শরীর খারাপ, দেওরের কলেজ কি শ্বশুরমশাইয়ের রাগ করার অজুহাতে মেয়ের ফেরত যাবার ছটফটানিটা বড় চোখে লাগে।
এমনকি দ্বিরাগমনের পর আর বাপের বাড়ীতে রাত কাটায়নি মেয়ে।যখনই আসে জোড়ে আসে, মেয়েকে আর একা পাননা অমিতাদেবী। বাড়ী এলেই কলকলিয়ে মা-বাবার কাছে শ্বশুর-বাড়ির সবার প্রশংসায় পঞ্চ-মুখ মেয়ে, বাড়ীতে কে কেমন আছে জানতেও চায়না। । মা কিন্তু একান্তে ভাবেন বিয়ের পরদিন শ্বশুড়বাড়ী যাবার সময় মেয়ের সেই কান্না কোথায় গেল ! সেদিন রাতে কর্তাকে একা পেয়ে বলেই ফেললেন, “মায়ের ওপর মেয়ের টানটা ভাবনাকে দেখেও তো শিখতে পারত মেয়েটা!” দীননাথবাবু আজও মুচকি হাসলেন।
![]() |
~ কবি পরিচিতি ~ |
সুচিন্তিত মতামত দিন