উত্তরবঙ্গ ভ্রমণের কিছু প্রয়োজনীয় তথ্য


যাতায়াত
গ্যাংটক যেতে হলে শিলিগুড়ির বাস স্ট্যাণ্ড থেকে বাস ও জিপ পাওয়া যায়। এগুলি ছাড়ে তেনিজং নোরগে বাস স্ট্যাণ্ড থেকে। সকাল ৬:৩০টা ৭টা থেকেই বাস পাওয়া যায়। জিপগুলি মহানন্দা ব্রিজ থেকে যাত্রী ভর্তি হলেই ছাড়ে।

বাস বুকিং করতে: শিলিগুড়ি (০৩৫৩) ৪২১৪৯৬ / ৪৩২৭৫১
গ্যাংটক: (০৩৫৯২) ২২২০১৬
আরও জানতে https://www.sikkiminfo.net/bus_air_train_timings.htm

দমদম বিমানবন্দর থেকে উড়ানপথে বাগডোগরা। এখান থেকে গাড়ি ভাড়া নিয়ে সটান কালিম্পং বা পেদং যাওয়া যায়। হাওড়া ও শেয়ালদা স্টেশন থেক নিউ জলপাইগুড়ি অবধি প্রতিদিন প্রচুর ট্রেন চলে। নিউ জলপাইগুড়ি থেকে রিক্সা অথবা অটোয় শিলিগুড়ির তেনিজং নোরগে বাস টার্মিনাস কিংবা মিত্তল বাস স্ট্যাণ্ড। কালিম্পংয়ের সরকারি ও বেসরকারি বাস ছাড়ে প্রায় প্রতি ঘন্টায়। মিত্তল স্ট্যাণ্ড থেকে পাওয়া যাবে শাট্ল সুমো বা জিপ। কালিম্পং থেকে পেদং
যাওয়ার শাট্ল গাড়ি পাওয়া যাবে বাস স্ট্যাণ্ড থেকে। গাড়ি ভরলে তবেই ছাড়ে। এখান থেকে পুরো গাড়ি ভাড়া নিয়েও যাওয়া যেতে পারে সোজা পেদং।

উড়ানপথের হদিস পেতে: https://www.mapsofindia.com/flight-schedule/index.html
রেলপথের যাবতীয় খবরের জন্য: https://www.mapsofindia.com/railway-timetable/index.html

আবহাওয়া
সিকিম ও সংলগ্ন পশ্চিমবঙ্গের পাহাড়ি এলাকায় বেড়াবার আদর্শ সময় মার্চ থেকে অেক্টাবর মাস। নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি মাস অবধি ঠাণ্ডা বেশি। জুন থেকে সেপ্টেম্বর মাস বর্ষায় পাহাড়ি রাস্তায় ধস নামার ফলে রাস্তা মাঝেমধ্যেই বন্ধ হয়ে যায়। তাই এই সময়টা এড়িয়ে যাওয়াই উচিত হবে। গরমে তাপমাত্রা দিনের বেলা ১৫ ডিগ্রির উপরে ওঠে না। শীতে তাপমাত্রা হিমাঙ্কের নীচেও।

থাকা
গ্যাংটক ও কালিম্পংয়ে বেসরকারি হোটেল আছে বেশ কয়েকটা। এদের বুকিং কলকাতার কিছু ভ্রমণ সংস্থা করে থাকেন। না হলেও বিভিন্ন মানের হোটেল গন্তব্যে পৌছে অনায়াশে ঠিক করে নিতে পারবেন।
পেদংয়ের কয়েকটি বেসরকারি হোটেল:

পেদং হলিডে রিসর্ট
রাই নিবাস
পোস্ট অফিস: পেদং
জেলা: দার্জিলিং
ফোন: (০৩৫৫২) ২৮১৫৩৫
মোবাইল: ৯৯৩২৫ ১৬১২৫

দ্য সিল্করুট রিট্রিট
২১ মাইল
জেলা: দার্জিলিং
পেদং: ৭৩৪৩১১
ফোন: (০৩৫৫২) ২৮১৩২৭, ২৮১৫৪২
মোবাইল: ০৯৯৩২ ৭৭৫৫৯৫

ঋষি রিভার রিসর্ট
সেবাস্টিয়ান প্রধান
ঋষি
পূর্ব সিকিম
মোবাইল: ০৯৯৩২৭ ৪৪৪০৭,
০৯৯৩২৬ ৮০১৭০

মেলা-পার্বণ
সিকিম ও দার্জিলিং পাহাড়ে বৌদ্ধ গোম্ফায় বছরে প্রধানত দুটি নৃত্যোৎসব হয়। তিব্বতি দিনপিঞ্জকার দ্বাদশ মাসে, অর্থাৎ ইংরেজি ফেব্রুয়ারি-মার্চ মাস নাগাদ অনুষ্ঠিত হয় মহাকালের উদ্দেশ্যে লামা নৃত্য। আর এই পিঞ্জকার দ্বিতীয় মাসে দেখা যায় বিখ্যাত ছাম নাচ যা মহাগুরু পদ্মসম্ভবের প্রতি শ্রদ্ধাবশত অনুষ্ঠিত হয়।

পেদংয়ে প্রতি বছর বসে ড্যামস্যাং মেলা। রাজা গেবো আচিয়কের জন্মতিথি পালন করতে এই মেলা শুরু হয়।
দীপাবলিতে এই অঞ্চলে পালিত হয় দেউসি-ভাইলো উৎসব। প্রথম দুই দিন মেয়েরা ও পরের দুই দিন ছেলের দল সুর করে পাচালি রীতির আলেখ্যে রামায়ণের গান শোনায় বাড়ি বাড়ি। বদলে তারা পায় গৃহেস্থর দানসামগ্রী।
মে মাসে ডক্টর গ্রাহাম্স হোমে প্রতি বছর পালিত হয় মে-ফেয়ার। স্কুলের ছাত্রছাত্রী ছাড়াও সাধারণের প্রবেশ অবাধ এই মেলায়। বাচ্চাদের তৈরি হরেক জিনিসের প্রদর্শনী ছাড়াও মেলে কুটির শিল্পজাত বিভিন্ন দরকারি সামগ্রী।

টুকিটাকি
এই এলাকায় বেড়াতে গরমে হাল্কা শীতপোষাক দরকার। কিন্তু নভেম্বর থেকে মার্চের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত চাই মোটা উলের গরমজামা। বরফের মধ্যে বেড়াতে যেতে চাইলে উপযুক্ত জুতো থাকা অতি আবশ্যক।
কালিম্পং এর পরে যাতায়াত, ইত্যাদির প্রয়োজনে নগদ টাকা সঙ্গে রাখা জরুরি।
পাহাড়ে পানীয় জলের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। মিনারেল ওয়াটার কেনার সময় তারিখ দেখে নিতে হবে। হোটেল রেস্তোরায় জল খেতে হলে জিওলিন মিশিয়ে খাওয়া উচিত হবে।

সূত্রঃ আনন্দবাজার পত্রিকা, ১ জুলাই ২০০৮

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.