অণু গল্প
যাবো বেলফাস্টে এক সেমিনারে। 'হিউমেন মাইন্ড রিডার' শিরোনামে আমার একটি পেপার ব্রিটিশ কম্পিউটার সোসাইটি-র জর্ণালে প্রকাশ হলে বেশ সাড়া পড়ে যায়। কুইনস ইউনিভার্সিটি বেলফাস্টে আয়োজিত সেমিনারে আমিই একমাত্র কী-নোট স্পিকার। ইউনিভার্সিটি টিকেট পাঠিয়েছে এবং হোটেল হিলটনে থাকার বুকিংও দিয়েছে ওরা। এছাড়া সেমিনারে এটেন্ড করার জন্য দুই হাজার ইউরো অনারিয়ামও দিবে। মনে মনে একটু শ্লাঘা বোধ করছি।
হিথরোতে ইমিগ্রেশনের ঝামেলা শেষ করে লাউনজে হাঁটাহাটি করছি। চেয়ে দেখি, অনেকেই আমাকে দেখছে, বিশেষ করে সাদা চামড়ার লোকগুলো। এর কারণও আমার জানা। ইচ্ছে করেই আজ শাড়ি পড়েছি। তাও আবার ব্রাইট কালারের। মেরুন রঙা এ কটকা শাড়িটি মা পাঠিয়েছে। এ শাড়িতে যে আমার সেক্সি লুক আরো হাজারো গুণ বাড়িয়েছে তা আমি আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে বেশ বুঝতে পেরেছি। মনে পড়ছে আমার এক কবি বন্ধুর কবিতার পঙক্তি:
শাড়িতে জড়িয়ে আছে জাদু
জাদু দেখবো আমি -
এ মূহুর্তে যে সব যুবকেরা আমাকে দেখছে ওদের চোখের দিকে তাকিয়ে বেশ বুঝতে পারছি তারাও জাদু দেখতে চায়। ভাবতে মজাই লাগছে আমার।
হঠাৎ নজরে আসে এক ভারতীয় প্রৌঢ় আমাকে দেখছে তারিয়ে তারিয়ে। যেন গিলে খাবে। মেজাজটা খিঁচড়ে গেলো। বুড়ো বয়সে ভিমরতি! আমার প্রস্তাবিত মাইন্ড রিডার-টি যদি সত্যি সত্যিই ইম্পলিমেনটেশন করা যেতো তবে নিশ্চিত এই বুড়োর নোংরা ভাবনা মনিটরে ভেসে উঠতো।
একী, লোকটা যে আমার দিকেই আসছে ! ভড়কে যাই আমি! কাছে এসেই ভদ্রলোক বলে উঠেন, "অনেকক্ষণ ধরেই দেখছিলাম তোমাকে। মা তুমি কি আফজালের মেয়ে টিনা না? আমি আফজালের বন্ধু, তোমার হিরণ চাচা। অনেক বছর পরে দেখা। কি চিনতে পারছো এখন?"
- ঢাকা -
সুচিন্তিত মতামত দিন