
'খোলা চিঠি'
প্রিয় অমলকান্তি,
কেমন আছো?
আজ নববর্ষ,জানো
হাজার ব্যস্ততা, অ-ব্যস্ততার মাঝেও
রোজ,আজকাল মনে পড়ে তোমাকে!
আমরা,যারা ডাক্তার-মোক্তার-মামলা-আমলা হতে চেয়েছি,
কেউ কেউ ভালো আছি,
হয়েছে কারুর কারুর স্বপ্ন পূরণ
কিন্তু হাসে না, হাসি না!
তোমার ঐ বন্ধু, যে থাকে জার্মানি তে
ও ভালো নেই...
কোটি টাকার ঝলসানিতে ঝলসে গিয়েছেন ওর বিধবা
মা,হরিদেবপুরের বাড়ীতে একাই থাকেন,
দুটো ফুটিয়ে খান, রেডিয়ো শোনেন, দিন গোনেন
হাসেন না;
আর সেই যে অধ্যাপক!
লন্ডন এ বড় ইস্কুল এ খুব নাম,
সোনার চশমা!
সন্ধে বেলায় দামী হুইস্কির সাথে
কম আলোয় চোখে না পড়া ক ফোঁটা জল গড়িয়ে আসে..
কি ভয়ানক লজ্জায় পড়েন নিজের কাছে!
ওর বাবা কে মনে আছে?
প্রভিডেন্ড ফান্ডের সব টাকা উজাড় করে
বিলেতে পাঠিয়েছিলেন ছেলেকে!
পেসমেকার দুর্মূল্য হয়ে গেলো তারপর,
না হেসেই চলে গেলেন,
আর ও লন্ডন থেকে এসে লাশ টার
পায়ে হাত দিলো... প্রণাম, না ক্ষমা জানিনা...
আমি দামী টিভি তে তরুন রক্তের ব্যাটিং দেখি,
বিড়ি,স্বাদ বদলাতে সিগারেট খাই,
বাংলা, উপহারে পাওয়া বিলিতি...
হাসপাতালেও যাই,কাঁকড়া-মাকড়সা তাড়াতে,
হাসি না!
সকালে নববর্ষের সভা করতে
সাদা বাড়িটার দিকে যাবার সময়
একমুঠো রোদ্দুর হেসে উঠলো,
মাথার টুপি খুলে মুখে মেখে নেওয়ার সময়
চোখবোজা সুখে দেখলাম
অমলকান্তি রোদ্দুর হয়ে ভালো আছে,
হাসে...
- কলকাতা -
সুচিন্তিত মতামত দিন