
উত্তেজনার ম্যাচ
প্রেমের মাপেই প্রতারণা,
কাপড় মেপে বিকিনি, কাজের মাপে ঘুষ
জলের মাপেই জন্মায় প্রতিটি জলাধার
ঘুষ শব্দটায় শিল্পমিতি নেই,
বোধকরি উৎকোচ বলাই শোভন
জানালায় চোখ রেখে দেখো
আকাশ তোমার গরাদের মাপেই বানানো
গিরিনিতম্ব—দেখেছো তুমি?
পাথর খুলে নেমে আসা আনন্দ জল?
কী করে সম্ভব এমন !
ছন্দ, গীত, নৃত্য, কোলহল
জীবন যত দীর্ঘই হোক, আদতে সীমিত ওভারেরই খেলা ...
লখিন্দর
কাল রাতে নিজেকে রেখে গেছ আমার ঘরে
খানিকটা বিছিয়েছ খাটে, বাকিটা বুকের ভাঁজে
চীনামাটির মগ-এ রেখেছ কিংশুক; সুয়োরানীর মোহর—
বুনো আপেলের গন্ধ ঢেলেছ চাদরে, ছায়াপথে ফলিত রসায়ন
বাতাশেও মিশে আছ খানিক কস্তুরী, সুগন্ধ নিঃশ্বাস
আয়নাতে এখনো ঝুলছে কারুপণ্যের দোকান
সময় হঠৎ সওয়ার হলে পাগলা ঘোড়ার পিঠে
দেয়ালঘড়িতে বাজে দশনম্বর বিপদ সঙ্কেত!
হঠাৎ সুনামি সময় দেয় না কোনো মৃত্যুপ্রস্তুতির
প্রথম দমকে কাটে উচ্ছিষ্ট নেশা
উচ্চাঙ্গের আবরণ জোড়া চশমার মত
কারুকর্মের খাপ খুলে নিষ্ক্রান্ত হয় টানটান সামুরাই
হাত পা সব খুলে বানভাসি কে আমি? এ কোন লখিন্দর
উপলখন্ডের উপাখ্যান!
এখনো কি
এলেবেলে স্মৃতিরা ওলোট পালোট করে
তোমার ভাবনা-উঠোনের পরিপাটি পলি?
এখনো কি
দীর্ঘ নিঃশ্বাসেরা তোমার কষ্টের উনুনে
দাপাদাপি হাওয়ায় উস্কে দেয় যন্ত্রনার শিখা?
এখনো কি
শেষ বিকেলের মিষ্টি রোদ তোমায় টেনে
আনে উদোম ছাদের পূবকোণ ঝুল ছায়ায়?
নিষ্ঠুর প্রেমিক হিসেবে ভালই সুখ্যাতি আমার।
দেখতেই পাচ্ছ একদম ভাবিনা আর তোমাকে।
শুধু যখন রোজ সকালে ঘুম ভাঙ্গে তখন একটু
আর রোজ রাতে ঘুমের কুসুমে যখন ওম পাইনা
একটু তুমি যেন আধটু হানা দিয়েই যাও।
আমি এতো ভুলো যে তোমার অবয়ব খুঁজে পাইনা;
যখন পূর্ণিমার রাতগুলোতে ছাদে একা হাঁটি
কিম্বা রোজ ভোরে বেরোবার সময় কোন শার্টটা পরবো
ঠিক বুঝে উঠিনা তখন মনে হয় কে যেন নেই।
তুমিও জানি এমনি করেই ভুলে গেছো কেবল যখন
তোমার মাঝ রাতের ঘুমে আর ডাকাত পড়েনা;
কোন ছুটির সকালে খুব মন খারাপ করা রোদ ওঠে আকাশে
কিম্বা সমুদ্রের বেলা ধরে হেঁটে যাও নতুন প্রেমিকের হাত ধরে
আমি ঠিক জানি সাগর পারের হিম-হাওয়ায় ভেসে
আসে বিকেলের নরম রোদে পালক ভেজানো গাংচিল
তোমার কানে কানে বাজিয়ে চলে একটা নামের নৈবেদ্য
পরিপাটি চুল এলো হাওয়ায় দুলিয়ে তুমিও ফিরে ফিরে দেখো পিছনের
উপলখন্ড
যেখানে এমনি কোন বিকেলে পা ছড়িয়ে বসেছিলে কারো কাঁধে মাথা এলিয়ে ...।
স্বপ্নকুঁড়ি
আর কবে ফুটবি বল? না কি কুঁড়িতেই বুড়ী !
আয় দুহাতে ম্যালাই তোরে পাথর কুসুম
কী লাগবে? পাচারকৃত সোনাবার? চৌদ্দমন ঘি?
দিস্তা দিস্তা টাকা, এই তো না কী !
--হুস! অতো কিছু লাগে না আমার
স্বপ্ন ফোটাতে টাকা চাই বুঝি ? সরো ! আমি সে নই
ওসব কুলটা, স্বপ্নদোষ, দেবদেসে দাড়ি
কামভাবে কাঁপা জটিল কুটিল, ওটা দুঃস্বপ্নই
তোকে ফোটাতেই এতো আয়োজন
এতো চাপাচোপা, ওরে দাপাদাপি !
তুই কারো তবে খোলামেলা নদীস্নান বুঝি!
খোঁপায় ভেজানো ভুল? ফুটিস না কেন রে? কুটিস শুধুই
--কুঁড়ি কী ফোটানো যায় যে ফোটে আপন নিয়মে
নিবিড় শিশির, কিছু কান্না গোছানো কষ্ট
আয়ীশা পুলক, মাখা মাখা যাতনা কিছু
সিদ্দিকা কবিরের মতো করে দিস
আমি তোর স্বপ্নকুঁড়ি
পুজোর ভঙ্গিতে
একদিন ভোরে দেখিস
নীরব হিরণে ফুটে আছি তোর বাগানেই...
-ঢাকা -
সুচিন্তিত মতামত দিন