
একগুচ্ছ কবিতা
এক
মেঘেরাও ভুল করে অফ সিজনে ঝরায় উত্তাল জোছনা, মাতোয়ারা বালিকা হয়ে যায় উচ্ছল রমণী।
পাহাড় কোটরে বিষণ্ণ বিলাপে ক্যাকটাস ফোটায় ফুল। ক্যাকটাসের সব কষ্ট বুকে পোষে মরু কবি আন্ওয়ার হৃদয় মর্মরে চলছে লিখে বিরহী কাসিদা।
বালিকা তুমি হয়ে গেছো রমণী, দিয়ে যাও তোমার ছোঁয়া, বিরহী কাসিদা উড়ে যাক আজ আনন্দ পায়রা হয়ে।
দুই
ফাঁকি দিবি আমায় ! বাটি চালানে জেনে গেছি তোর মনঘর। গাঢ় হলে প্রেম আষাঢ় ঝরায়। আজো ঝরছে। তোর চোখে এতো জল।
মনঘরে তোর এত ভালবাসা ! মমি করে রেখে দে না আমায় !
তিন
দোপাট্টা ভিজে গেছে চোখের জলে।
কোথায় চোখের জল?
আমি তো দেখছি দু'গাল বেয়ে ঝরছে শুধু বিষণ্ণ কবিতা।
কী অভিমানেই না সেদিন চাঁদ ঝরিয়েছিল কষ্ট কষ্ট নীল আলো। আমি জানি সে কথা।
অভিমানী কবিতা তোমার শুধুই কি ভিজিয়েছে দোপাট্টা! আমিও কি ভিজিনি !
খুঁজছো আমাকে?
আরশিতে মুখ দ্যাখো। তোমার দুঃখজলে দ্রবীভূত আমি কবিতা হয়ে কী কষ্টেই না পড়ছি ঝরে!!
চার
হলপ করেই বলছি আমি, স্বয়ং প্লেটোও হেরে যেতেন যুবাকালে তোমার দেখা পেলে, রিপাবলিকে কবি ও কবিতা বাতিলের স্পর্ধা না দেখিয়ে প্রেমাচ্ছন্নে তোমার ঠোঁটে ঠোঁট রেখে একের পর একে লিখে যেতেন অমর সব কাব্যগাঁথা।
তুমি জাদু জানো হে নারী, অবেলাতেও মিউ মিউ করছে আমার সব লজিক।
হেরে গেছি প্রমীলার কাছে। তাতে কী! শেষটায় আমিই জয়ী।
পাঁচ
হয়েছি বামন তাতে কী ! আদুরে আঁকশিতেই এনেছি টেনে আকাশের চাঁদ, ঐ যে দ্যাখো খোয়াব খোঁয়ারিতে এখনো আছে মেতে।
বাইরে কেঁচোর নেত্য, ভেতরে বাদশাহ্ জাফর, শরাবে আমি।
ছয়
সাপের লেজে পা দেওয়ার মজাই আলাদা, গোখরো ফণাও ঝরাতে জানে প্রণতঃ আবেগ।
আগুনপুরুষ হয়ে আগুনগোলা লোফালোফির কামুকতায় বরফমাখন হয়ে যাওয়ার বড়ই সাধ।
পেতে দে তো শীতল পাটি, হুকো টানি।
সাত
চমকিত জ্যোছনার শুভ্র আমেজে গেঁথে গেছো তুমি; মনাকাশ বোঝে কি আর গুরুচন্ডালী প্রমাদ!
চান্দ রাইতে বড় হাউস জাগে, দেহি ম্যাডামের মুখ।
আট
অলিন্দ গলে জ্যোছনার ছোঁয়া, নস্টালজিয়া করাতে কাটছে হৃদয়, তোমার রোশনাইতে আমিও তো ছিলাম ।
ও লো, কে আছিস, কম্বল দিয়ে ঢেকে দে তো পূর্ণিমা চাঁদ।
নয়
ছো মেরে শিকার ধরে উড়াল দেয় সুখি মাছরাঙা। পাখিরা কি স্বপ্ন দ্যাখে? পাখিস্বপ্নের আয়ুস্কাল কতোটুকু? পাখিচেতনা কি ধারণ করতে পারে আস্ত একটা নদী!
চেতনায় সাঁতার কাটছে নদী । একটি নয়, হাজারো নদীর কমপ্লেক্স ভেরিয়েবলে কয়লা কয়লা আমি। স্বপ্নবাজ মানুষ কখনো কি ছুঁতে পারে সুখের মুখ !!
সময়ের ফাঁক গলিয়ে হঠাৎ আসা সুর সহসাই হারিয়ে যায় কোথায় হিসেব জানে না ভেরেন্ডাভাজা জীবন।
দশ
প্রাচীন পুঁথিতে ডুব দিয়ে উঠে আসা মাছরাঙার চোখে চোখ রেখে চিনেছি আমি ভালোবাসার ঘ্রাণ। বিন্দুতে সমুদ্র জোশ, শৃঙ্গার রসের বাড়ানো হাতেই প্রেমঝলক, সময়ের পরিসীমায় মাপতে যেও না শীর্ষসুখের ঈশ্বরবিলাস!
সুচিন্তিত মতামত দিন