
আপনজন
শরতের আকাশে এক গুচ্ছ সাদা মেঘ দেখে
মনে পড়ে গেলো হিমশীতল কাশ্মীরের পাহাড়
যেখানে বরফ জমে থাকতো এখানে ওখানে,আর
পেঁজা তুলোর মত মেঘেরা এক আকাশ থেকে
আর এক কোনো আকাশে খুঁজে বেড়াত তাদের ঘর |
কে যেন বলেছিল যাদের ঘর নেই তারা যাযাবর
তাই আজো আমার ঘর হলো না আমি যাযাবরই
রয়ে গেলাম; আমার মনের আকাশে একাই
ঘুরে ঘুরে বেড়াই পথহারা ওই হরিনটার মত,
কখনো বা পিছন ফিরে দেখি কেউ আসছে কি না !
পেঙ্গুইনরা বেশ আছে কেমন বসতি গড়ে ফেলে,
শীতলতম এন্টারটিকায় মানুষের মত হেঁটে ফেরে |
কে যেন আমার হাত দেখে বলেছিল যে এ খুব
মিশুকে হবে সবাইকে নিজের মত আপন করে নেবে,
তাই ত' পেলাম কেমন সবাইকে নিজের মত করে ||
আলো
কত ভাবে আলো দিই বলো ?
সুর্য্য ছোঁয়া ঝিকিমিকি আলো
জোছনা রাতের মায়াবিনী আলো
ভেসে যাওয়া মেঘে আবছায়া আলো
শিশিরে শিশিরে চিকচিকে আলো
আঁচলেতে ঢাকা প্রদীপের আলো
সবই ত' রেখেছি তোমার জন্য |
না যদি নাও, বলে দাও তবে
সব আলো বিলিয়ে দেব ছিটিয়ে দেব,
একাকার করে ভাসিয়ে দেবো
তবু তোমায় ভুলে যেতে দেব না,
এ আমি শুধু ভালোবেসেছিলাম
তোমাকেই আলোর পরশে তোমার
বিহবল নিষ্পলক চোখ ভাসাতে ||
বোধোদয়
স্বেচ্ছায় হারিয়েছে তার শান্ত দিঘী বুক
বারবার হেনেছে উপহাসের কষাঘাত,
নদী তরঙ্গে ভাসমান জীবনে হয় নি কো
বোধোদয়, ভারসাম্যহীন চিন্তার স্রোত
ভাসিয়ে দিয়েছে আপাত জীবনের গতি,
মেখলা মেয়ে বাড়িয়েছে হাত বন্ধুত্বের
দায়িত্ত্ব সীমাহীনতায় সুষমাছন্ন আলোকে,
লজ্জাহীন কাপুরুষতায় কলুসিত মনন
জেনেছে শুধু নিজস্ব ঠুনকো অহম আর
নাটকীয়তার অশান্ত নিষ্ঠুর ভাবোচ্ছ্বাস,
নির্লজ্জ বিবরণের উন্মাদনা করেছিল গ্রাস
অবিবেচকের কঠোর বিষাক্ত হৃদয়,
আজ সে খোঁজে পলিভরা নদী আর
পালকের বুক কোন নতজানু প্রভাতে,
যখন নদী ফিরে গেছে তার আপন গতিতে
এক শান্ত সমাহিত ঐশর্য্যান্বিত আজানে |
একাকিনী রাধা
রাধা চলে বনে কুসুমকাননে
শ্যামের বংশী শুনিয়া
তনু জ্বরজ্বর হিয়া থরথর
হৃদি ওঠে ভয়ে কাঁপিয়া |
ললিতা, বিশাখা কোথা তোরা সখি
আয় ছুটে মোর কাছে রে
একাকী কেমনে সহি এ যাতনা
নয়নে অশ্রূ ঝরে রে |
কুহুকুহু ডাকে শাখে কোয়েলিয়া
পিউপিউ ডাকে পাপিয়া
বিরহিনী আমি ভ্রমি মিছে কেন
দুঃখ জ্বালা এই সহিয়া ?
থাক্ তবে শ্যাম কাজ নেই আর
পারি না বহিতে এ জ্বালা
বাঁকেবিহারী মুরতি তোমারি
হৃদি মোর করে আলা ||
নিউইয়র্ক ।
সুচিন্তিত মতামত দিন