
"ভালোবাসার স্বরলিপি!"
জলের দাগে ব্যাথা লিখে
দেখেছি টাপটুপ ইতিহাসের শিরদাঁড়া বেয়ে বিক্ষোভ মিছিলে বেদনাহত মৌন বাঁশির সুর!
বিশুদ্ধ রাগিনীর ফ্লাগ মার্চের
সকালে রামধনু বৈঠক
মধ্যরাতের খতিয়ান নিলে
বিবস্ত্র হয় লজ্জা!
তবু লাল নীল ওড়নার
সবুজ হাতছানি:
ক্লান্ত দু-তিন পেগ
উসখুস-সন্ধ্যা কখনো
এড়াতে পারেনি!
কালপুরুষের ছায়া ধরে ধরে
অরুন্ধুতী আলোর ডাক
শুনবো বলে কত নারীর
ঠোঁটে উৎকর্ণ থেকেছি সারা রাত!
ব্যস্ত যৌবনের ম্যারাথন
জুড়ে আসমুদ্র হিমাচল-
পাঁজরে দাঁড়ের শব্দে
ভালোবাসার ভগ্ন ইমারত!
মধ্যবর্তী আবেগের দহন জুড়ে আলিঙ্গনের ফাঁপা আওয়াজ মেঘমল্লার নামাতে
পারেনি আজও!
ওদিকে ভালোবাসার স্বরলিপি জুড়ে
নিস্তব্ধ সংলাপ প্রহর গোনে
পথিকের!
"বিষাদসিন্ধু!"
বিষণ্ণ মোমবাতির নীচে
পাণ্ডুর চাঁদ
অমাবস্যার ধ্যানে!
কফিনের শেষ পেরেকের
বিলাপে এলবামের পাতা জুড়ে আজও নাভিকুণ্ডের ওম! এখানে অজস্র শীততাপ নিয়ন্ত্রিত হৃদয়
খেলা করে যদিও আজকাল!
স্তম্ভিত যমুনার নিস্তরঙ্গ জলের স্মৃতি অনুবাদ করতে গিয়ে স্থবির কলম!
যৌবনের পরপারে বুকের শাদা লোম জুড়ে
শূন্য ক্যানভাসে বিশীর্ণ গল্প
সম্পূর্ণ হয়নি আজও!
বিষাদের আর এক নাম যদি হয় দুটুকরো ছেঁড়া চিরকুটের মতো বিচূর্ণ প্রত্যাশা, তবে প্রতিদিন মহাকাব্য হয়ে ওঠে জীবন!
শাশ্বত জ্যোৎস্না ভেজা জলে
মন ডুবুরির সেতারে বিলম্বিত মালকোষে
ক্যামেরা চলেছে!
ঢেউয়ের পর ঢেউ জুড়ে
শুধু প্রেমিক প্রেমিকার কাহিনী নয়! এ পৃথিবী
বিষাদসিন্ধুর
এক বিপুল বিস্ময়!
"বৈনাশিক নয়!"
সেদিনের সোহাগের পর অনেক চুম্বন ঝরে গেল
অঝোরে!
হয়ত সূর্যকণায় ইর্ষার আলো লেগেছিল
প্রথম প্রভাতের উকিঁতে!
সময়ের সংকেতে অনেক গূঢ়তর ইংগিত শিরদাঁড়া বেয়ে নেমে যায়
অসময়ের বিলাসী উপেক্ষায় হয়ত!
চক মেলানো চৌষট্টিখোপের
মঞ্চে সবটাই মূলত কাল্পনিক হয়ত নয়!
নয় সবটাই গাণিতিক
বিশুদ্ধতা!
নয় শুধুই হারজিতের উল্লাস ব্যর্থতা! নয় শুধুই দেনা পাওনার সূক্ষ্ম কেতাবী হিসেব! তবু তোমাকে
চিনতে ভুল হয়ে গেলে!
সন্ধ্যার অবকাশ প্রলম্বিত
হলে সহসা!
এই পৃথিবীর সমস্ত বিভ্রান্তি
ঠেলে--অমল প্রভাত
মুঠোর মধ্যে ধরে!
যদি পারতাম বলতে তোমায়
ভুলটা আমারই!
এসো আবার ফিরতি পথ ধরি? পুরানো নোটের মতো সংকোচে!
সব নদী মজে গেলেও
পিপাসা বালি খুঁড়ে মরে!
"সঙ্গোপনে শিরায় শিরায়!"
সঙ্গোপন মাধুর্য্যের শিরায় শিরায় এসো পরস্পর
মুখোমুখি বসি!
শেষ ট্রেনগুলো চলে যেতে দাও! প্ল্যাটফর্মের শেষ বিন্দুতে আমাদের হৃদয়
পরস্পর জ্যোৎস্না হয়ে থাক!
দিনান্তের সমস্ত ক্ষত চীনের প্রাচীর হতে চায় জানি!
তবু তোমার হৃদয়ে
মুখ লুকালে কি আর এমন ক্ষতি হতো পথিকের?
যে তর্কগুলো ক্রমে কূট হয়ে
ওঠে! যে কষ্টগুলো ক্ষোভ হয়ে ফোটে! যে অভিমান বিদ্বেষ হয়ে জোটে; এসো
তোমার ঠোঁটে চুম্বন এঁকে দেখি অবিরাম উষ্ণতায়
এত অন্ধকার আলো হয় কিনা? প্ল্যাটফর্মের এই শেষ বিন্দু ব্ল্যাকহোল নয় আর!
বিগব্যঙ্গ করে দি এসো নক্ষত্রের তারায় ভরা
এই মধু রাতে! হয়তো
আত্মপক্ষ সমর্থন নয়, আত্মগ্লানি স্খলনে ---
জ্বলে ওঠে পূনর্বার অমলিন হৃদয়!
"একরৈখিক বৃত্তে!"
একরৈখিক বৃত্তের
সমদর্শী কেন্দ্রে স্থির নেত্রে স্থিত হয়েছি অবশেষে!
দেখেছি হেমন্তিকা দৃষ্টির
পঞ্চব্যঞ্জনে; মুঠো মুঠো মৃত্যুর টোকেন হাতে
সূতিকাগারের প্রথম কান্না
কানে এসে বেঁধে!
জলজ সমুদ্রের সংসার থেকে ক্রমশ আকাশমুখী
যে উড়ান!
বাজের নখের মতো ধরালো
তীব্রতায়! তীব্রতারও প্রয়োজন আজে
প্রজননের পর!
অভিযোজনের পথে
ক্লান্তিহীন অভীপ্সা তবু
মরণের কাছে সৎ! আমাদের চৌষট্টিকলার পরিসরে
মৃত্যুরও ভুমিকা আছে!
সমস্ত অহমিকার কাছে নতজানু সময়ের গতি
শেষ পংতিতে এসে
হয়ত সমদর্শী হবে একদিন!
হৃদয়ের গভীর গিরিখাতে
তোমার জন্য জলপ্রপাত ঝরিয়ে চলেছি প্রিয়ে!
মৃত্যু উপত্যাকা দিয়ে
আমাদের আলিঙ্গন আলপনা
দিক চুম্বনের! মৃত্যুর অধরে জন্মের!
বর্ধমান ।
সুচিন্তিত মতামত দিন