ব্রহ্মসঙ্গীত ও রবীন্দ্রনাথ
ব্রহ্মসংগীত হল ব্রাহ্মসমাজের উপাসনার নিমিত্ত রচিত ও গেয় আধ্যাত্মিক সঙ্গীত পদাবলি। ঊনবিংশ শতাব্দীর প্রথম ভাগ থেকে বিংশ শতাব্দীর মধ্যভাগ পর্যন্ত সময় ব্রহ্মসঙ্গীতের রচনাকাল। ‘ব্রহ্মসংগীত’ নামটি ব্রাহ্মসমাজ প্রতিষ্ঠাতা ও প্রথম ব্রহ্মসঙ্গীত রচয়িতা রাজা রামমোহন রায় প্রদত্ত।
পিতা দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং তাঁর অগ্রজদের সূত্রে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ব্রহ্মসঙ্গীত দিয়ে তাঁর গানের খাতা খোলেন। তাঁর রচিত প্রথম ব্রহ্মসঙ্গীতটি ছিল গান 'গগনের থালে রবি চন্দ্র দীপক জ্বলে'।
এই গানটি অনুবাদকৃত একটি শিখভজন। এঁরপর ১২৯২ বঙ্গাব্দে (১৮৮৫ খ্রিষ্টাব্দে) তাঁর রবিচ্ছায়া নামক গীতিগ্রন্থ প্রকাশিত হয়। এই গ্রন্থে ৭৪টি ব্রহ্মসঙ্গীত গৃহীত হয়েছিল।

বাংলা কাব্যসংগীতের ইতিহাসে ব্রহ্মসংগীতের ভূমিকা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। ব্রাহ্মধর্ম, ব্রহ্মোপাসনা, ব্রহ্মচিন্তাকে অন্তর্মুখী নিবিড় ও প্রাণময় করার জন্যই ব্রহ্মসংগীতের সৃষ্টি। সকল সংস্কারের সংকীর্ণতাকে রামমোহন একাধারে দার্শনিক এবং নান্দনিক আবেদনে সমৃদ্ধ গানের ঝরনাধারায় ধুয়ে দিতে চেয়েছিলেন। বহু খ্যাত-অখ্যাত গীতিকারদের ব্রহ্মসংগীত রচনায় বাংলা কাব্যগীতির একটি ঐতিহাসিক অধ্যায় রচিত হয়েছিল। শাস্ত্রীয় সংগীতগুণী যদুভট্ট, বিষ্ণু চক্রবর্তী প্রমুখ বহু শীর্ষ সংগীতকার ব্রহ্মসংগীতের সুর-সংযোজন করেছিলেন। রবীন্দ্রনাথ রচিত ব্রহ্মসংগীতগুলি স্বশ্রেণির উন্নততম মানের বলেই এখনও তাঁর নিজের সংগীতভাণ্ডারের জনপ্রিয়তম অংশে বিরাজ করে। মোটকথা, বিভিন্ন রাগ-রাগিণীর সমন্বয়ে ধ্রুপদী আঙ্গিকে রচিত ব্রহ্মসংগীত-শীর্ষক প্রকরণটি বাংলা গানের মহাফেজখানায় একটি বিশেষ সময়ের দলিল হিসেবে স্থায়ী সম্পদরূপে সংরক্ষিত |
ইউ এস এ
bhalo laglo pore...prochur information achhe ja age jantam na :)
উত্তরমুছুনতথ্য সমৃদ্ধ লেখাটি রবীন্দ্রনাথের উন্মেষপর্বের সাথে জড়িত গুরুত্বপূর্ণ এই অধ্যায়টি সম্পর্ক পাঠকচিত্তকে স্পষ্ট ভাবে আলোকদীপ্ত করে গেল! ইন্দ্রাণীকে বিশেষ ভাবে ধন্যবাদ, রবি জীবনের এই স্বল্প আলোচিত দিকটিকে নতুন ভাবে উপস্থিত করার জন্যে!
উত্তরমুছুনসুচিন্তিত মতামত দিন