
বর্তমানের রোদে ঝলসাতে চাই ভবিষ্যৎ
ভালবাসার সূর্যস্নানে দগ্ধ স্বপ্ন-বিভোর মন
স্বার্থপরের মত নিজ পৃথিবী নিয়ে মগ্ন
হামাগুড়ি দিয়ে হয় পারাপার জীবন নদী
দ্বিধাহীন দমকা বাতাসে ভোকাট্টা ঘুড়ি।
হৃদয়ক্ষরণের অশ্রুতে নদীর ঝর্ণা স্রোতস্বিনী
মৌনতার নৌকোর ভেঙ্গেছে পাটাতন
অর্ঘটুকু পৌঁছানোর নির্ধারিত বাহন নিরুদ্দেশ
একাকীত্বের গুন টেনে চলেছে ভালবাসা।
বিষণ্ণতার নোনা বৃষ্টিতে ভিজছি সারাক্ষণ
কষ্টের এলোমেলো মেঘগুলো ঠিকানা বিহীন
যৌবনের শিশির প্রতিটি সুখ ফোঁটায়
শোকের সবটুকু নির্যাস শৃঙ্খলিত আজ।
সৌভাগ্যের গ্রহের কক্ষপথে ধোঁয়াশার কুণ্ডলী
অসীমের নীলে বাঁধা পড়েছে দিগন্তের সবুজ
মরীচিকার পিছনে শুধুই পণ্ডশ্রম
ঘুঘু চোখে খুঁজে দেখা অচেনা ভবিষ্যৎ।
বৈরিতাকে করে সহযাত্রী বেধেছি কানে ঘুঙ্গুর
খাঁচায় বন্দী সুখ পাখি, পাপড়ি মেলেছে ফুল
নৃত্যরত কোলাহল বাড়ায় অতীত তৃষ্ণা
অনিদ্রাকে করেছি মুষ্টিবদ্ধ, বেধেছি সপ্তসুর ।
লিঙ্গ পরিচয়হীন ভৌতিক ছায়ার অবাধ নৃত্যে
কর্মচঞ্চল হয় অনিশ্চিত ভবিষ্যতের শিবির
নতুন গল্প কথায় মশগুল বর্তমান
বিভ্রান্তির পথে আশার দিনপঞ্জি।
বর্তমানের রোদে ঝলসাতে চাই ভবিষ্যৎ
পক্ষপাতে দুষ্ট অতীত! চাই না অচলায়তন
পানীয় পানে অনীহা! সন্ধ্যা উৎসব তাই বিবর্ণ!
সুখের অসুখে ঝাপসা চোখ ! অবিন্যস্ত মুখ
জখম রাতের রূপ বিন্যাসে পরাভূত দুঃখ
অন্তরের ভিতরে অস্পষ্ট দাগ! স্মৃতিরা অবাক
বশীভূত আমার আমিত্ব সুখের খোঁজে ফেরার
কলঙ্কের সেতু পেড়িয়ে অজ্ঞাতবাসে ধ্বনি ।
নিজস্ব সংকেতে বলা হয় অনেক কথা
আবেগের অশ্রুতে ঝরে গোপন ব্যাকুলতা
না বলা সব বোঝে নাও অনুভবের রিপুতে
সংরক্ষিত সুর বাজাও দেহের বাঁশীতে।
চোখের বোবা সঙ্গীতে ভিজে যায় আকাশ
বেদনার নীল ছড়ায় দিগন্তের সীমানায়
সিঁদুরে বৃত্ত হয়ে কল্পনার মেঘ জমুক কপালে
প্রতিচ্ছায়ায় রঞ্জিত ওষ্ঠ যুগল! অজানা শিহরণ!

প্রত্যাখ্যানের নৃশংসতায় হয়ে যায় কাকতাড়ুয়া
দুরালাপে পরিমিত কথা ‘কেমন আছ,তুমি?’
প্রতি উত্তরে কিছুটা ইচ্ছাকৃত বিলম্ব
দীর্ঘশ্বাস নাকি উচ্ছ্বাস বোঝা গেল না
তার পর বর্ণমালার ছন্দে যত কথা
কখনো রূপক কখনওবা কবিতা।
এভাবেই চলছে নিরবধি আশার নদী
তরঙ্গায়িত ঢেউয়ের আঘাতে ভাঙ্গে ঘুম
প্রতিশ্রুতির বাতাসে উড়ে স্বপ্নবাজের ঘুড়ি।
মেঘের কুর্ণিশ বৃষ্টি নামার পূর্বাভাস
শীর্ষ পাতা থেকে ঝরে প্রতিশ্রুতির অশ্রু
হিজলের আঠা লেগে যাবে বলে
বাসন্তী রঙ্গের আঁচল ভিজাওনি সেদিন ।
লালচে নাকের চারপাশে ফোটায় ফোটায় ঘাম
শুষে নিতে নেমে আসে ভীরু শব্দ সৈনিক
প্রত্যাখ্যানের নৃশংসতায় হয়ে যায় কাকতাড়ুয়া
শব্দের মিছিল যদি পাশে এসে না দাঁড়াত
সমস্ত আগুন নিভে যেতে পারত সেদিন।
হাজার বছরের বাক্য চয়নে ভীত নই
জানি, ভাল না বাসার অধিকার আছে এখনও
একটুও খর্ব হয়নি তাতে ভালবাসার অধিকার
তাই ফিরে আসে বসন্ত, ভালবাসার জয় সর্বত্র ।
ঢাকা ।
সুচিন্তিত মতামত দিন