
মহাভারতী
আমি স্বয়ংসৃষ্ট নারী, আমি রাজবধূ, রাজবালা,
পাণ্ডব কুললক্ষ্মী আমি, সঙ্গী অপমানের জ্বালা।
পঞ্চ বীর স্বামী আমার, আমি স্বামী গরবিনী,
সত্যনিষ্ঠ, ধৈর্যশীলা, আমি নিত্যউভানি।।
বীর্যশুল্কা, স্বয়ম্বরা, পঞ্চ স্বামীর ধন,
ধর্মসঙ্কটে ভুলে গেছি কাকে চায় যে আমার মন।
আমি ধর্মরাজের অর্ধাঙ্গিনী, অর্জুন আমার হিয়া,
ভীমের আমি পরান-সখী, মাদ্রি তনয়দের প্রিয়া।।
কামাতুরের দৃষ্টি সয়েও আমি পঞ্চ স্বামীর সতী,
লজ্জা আমারও ভূষণ, আমি যে নারী, কুসুমমতি।
সতীন কাঁটা খুব সয়েছি, সয়েছি নারীত্বের অপমান,
বুক ভাঙলেও কেউ দেখেনি, চোখে জলের বান।।
বীরাঙ্গনা ক্ষত্রনারী, স্বামীর চোখে পণ্য,
পাশার দানে বিকিয়ে গেছি, সম্ভ্রম নগন্য।
অপমানের অনলে পুড়ি, মনে বিষাক্ত হুল,
দুঃশাসনের রক্ত ছাড়া বাঁধবো না আর চুল।।
কৃষ্ণসখী কৃষ্ণা আমি, আত্মভিমানে পূর্ণ,
আমার কারণে কৌরবকুলে বিধির দর্পচূর্ণ।
শত বিপদেও ভেঙ্গে পড়িনি, ছাড়িনি স্বামী সঙ্গ,
আমি পাণ্ডবদের অনুপ্রেরণা, রাজনীতির অঙ্গ।।
বিধিলিপি খণ্ডাবে কে, আমি পাঁচ শহীদের মা,
সন্তান শোকে বুক ভাঙলেও বুঝতে দেব না।
সর্বংসহা সীতা নই আমি, আমি স্বয়ম্ভূ মহাভারতী,
আমি পাঞ্চালী, পাঞ্চাল সূতা, আমিই যাজ্ঞসেনী দ্রৌপদী।।
কলকাতা ।
সুচিন্তিত মতামত দিন