
প্রজাতন্ত্র দিবসের কড়চা
ইতিহাসের অজস্র চড়াই-উৎড়াই আর মেঠো পথ পেড়িয়ে
চৌষট্টি বছরে পা দিয়েছ হে বয়স্ক যুবক
সচ্চিদানান্দ ও অন্যান্য এবং সর্বশেষ দলিত শ্রেণীর আম্বেদকরের প্রযোজনায় রচিত হয়েছিলে তুমি
১৯৩০ সালকে অমরতা দিতেই বুঝি তুমি মঞ্চস্থ হলে ৫০ এর এই দিনে !!
সে যাই হোক, ইতিহাসের বোধ-বুদ্ধির ঘাটতি নিয়েই তোমাকে বরণের আমার এ আয়োজন
আজ বেশি মনে পড়ে সুরেন্দ্রনাথ,বিপিন,শওকত,মোহাম্মদ, আবুল কালাম, বল্লভ ভাই প্যাটেল,অরবিন্দ সাহা
অন্যপটে সুভাষ,সূর্যসেন, প্রীতিলতা ,ইলা মিত্র ,ক্ষুদিরাম আরও কতশত নাম না জানা বিপ্লবীর কথা
মনে পড়ে নজরুলের কাড়ার ঐ লৌহ কপাট ভাংগার হুঙ্কার আর রবীন্দ্রনাথের নাইট খেতাব বর্জনের সাহসী প্রত্যয়
আত্মঘাতী বিপ্লবী, কলমী সৈনিক আর বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদদের একই মঞ্চে উপস্থিত করে
শুরু হলো মহাত্মা , মহাত্মা গান্ধীর অহিংস অসহযোগ আন্দোলন
আজ এই বর্ণিল দিনে সমগ্র উৎসব আর আয়োজনের ফাঁক গলে, তোমাদের কথা মনে পড়ে খুব
পলাশীর আম বাগানে দু’শ বছরের ঘনায়মান ষন্ধ্যার অন্ধকার যখন রূপ নিল তিমির রাত্তিরে
অন্ধকারের কীটেরা তখন গোল হয়ে চুঁষে খেতে লাগলো এই ঐতিহ্যবাহী জনপদের
রক্ত,মাংস,হাড্ডি আর প্রায় নয় হাজার বছরের সভ্যতার ইতিহাস
প্রকৃতি প্রেমিক কবি, খেয়ালি বাউল আর সুখী গেরস্থের সমৃদ্ধ জনপদে হানা দিল হায়েনার দল
বণিকের মুখোশ পরা লুটেরা দস্যুরা যখন খুলে ফেলল তাদের বাহারি মুখোশ
নিরীহ ভারতবাসী তা দেখে প্রথমত: বিস্মিত ও স্তম্ভিত হলো
বেনিয়া দস্যুদের শোষন আর ত্রাসনে দেয়ালে ঠেকল যখন আপামর ভারত বাসীর পিঠ
ঠিক তখনি------------
নিগৃহীত কবি হয়ে উঠল যোদ্ধা , কিষাণ-মজুর লাঙল ফেলে হয়ে গেল লড়াকু গেরিলা
বাউলেরা আরও জোরে জোরে হাটে - বাজারে গাইতে লাগল স্বাধীনতার গান
আমজনতারা সমস্বরে শ্লোগাণ দিতে লাগল , “বেনিয়া হটাও, ভারত বাঁচাও “
এরই ফাঁকে হয়ে গেল অনেক ইতিহাস
অধম কাপুরুষের দল ভারতবর্ষের দিকে দিকে ছড়িয়ে দিতে লাগল
বিভক্তি আর বিভক্তি ও ধর্মীয় উম্মাদনার বীজ
শোষনের মসনদটি পোক্ত করার প্রয়াসে বেজন্মারা করেনি এমন কোন হীন কাজ বাকী ছিলনা আর
....অবশেষে অনেক রক্তপাত আর সশশ্র বিপ্লবের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতা পেল ভারতমাতা
দিকে দিকে জনতারা সমস্বরে জয়ধ্বনি দিল , “বন্দে মাতরম”
আজকের এই হাস্যোজ্জ্বল , বর্ণালী দিনে আনন্দের ফাঁক গলে উঠে আসে
পিছিয়ে পড়া রাজ্যগুলোর হাহাকার আর আর্তনাদের করুণ মুখচ্ছবি
স্বাধীন ভারতে এখনও মূর্তিমান হয়ে সাম্রাজ্যবাদের চেহারা ভিন্ন মুখোশে
কর্পোরেট বেনিয়ারা চুষে খেতে চায় মেহনতী মানুষের নুন পান্তার শেষ আয়োজনটুকুও
রাস্তার পাশে মুখ থুবড়ে পরে থাকে দামিনীদের মৃতপ্রায় উলঙ্গ শরীর
দলিত শ্রেণীর বংশোদ্ভুত আম্বেদকরের প্রযোজনায় লেখা সংবিধান দিবসে
আজ মনে পড়ে দলিত মথিত অচ্ছুত হয়ে যাওয়া সেই শ্রেণীটির কথা
কাননে ,কান্তারে, বনে-বাদারে জীবাশ্ম হয়ে যাওয়া শহীদের লাশেরা কাঁদে
স্বপ্ন পূরনের প্রত্যাশায় আগামী দিনের পাণে তাঁকিয়ে আছে তাদের ধূসর, বিবর্ণ চোখ ।।
ঢাকা ।
সুচিন্তিত মতামত দিন