
কবিতা চর্চা কি কোন জীবিকা?
.jpg)
মুদ্রণকৌশল সহজ হওয়ায় আজকাল অনেক কবিই গাঁটের কড়ি খরচ করে বই ছাপাচ্ছেন। তাদের মাঝে খুব কমই বই বিক্রি করে মুদ্রণ খরচ তোলতে পারেন বলে জানা যায়। এমন কি জনপ্রিয় কবিদেরও কাব্য গ্রন্থের কাটতি আশাপ্রদ নয়। তুলনামূলক কথাসাহিত্য এক্ষেত্রে অনেক ভাল। হুমায়ুন আহমেদের কথা বাদই দিলাম, এদেশে বেশ কিছু স্বনামধন্য লেখক আছেন যাদের উপন্যাস/গল্প গ্রন্থের চাহিদা রয়েছে বাজারে এবং বই বিক্রির রয়্যালটির টাকা দিয়ে দিব্যি আছেন।
লেখালেখি জীবিকা হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। হুমায়ুন আহমেদ, সৈয়দ শামসুল হক, শীর্ষন্দু, সমরেশ মজুমদার প্রমূখ বাস্তব উদাহরণ। মূলত: এরা কথা সাহিত্যকেই উপজীব্য করেছেন তাদের জীবিকা হিসেবে।
প্রশ্ন হচ্ছে শুধুমাত্র কবিতা চর্চা কি কোন জীবিকা হতে পারে? আমি জানি না, বাংলাদেশে দুই প্রধান কবি আমার প্রিয় নির্মলেন্দু গুণ ও আল মাহমুদ কবিতা লিখে কতোটুকু বিত্তের অধিকারী হয়েছেন। (গুন দা আমার ফেইসবুক বন্ধু, উনি কি কিছু বলবেন?)
জমিদার পুত্র রবীন্দ্রনাথ নিশ্চয়ই কবিতা লিখে অর্থ উপার্জনের কথা ভাবেননি। হ্যা, শুধুমাত্র নোবল প্রাইজ পেয়ে তার কিছুটা অর্থ লাভ হয়েছিল। কিন্তু নোবেল বিজয়ী হয় কজন কবি? কবিতা লিখে কয় পয়সা পেয়েছিলেন নজরুল? কলকাতায় চরম দারিদ্রতার মুখোমুখি জীবনানন্দকে কবিতা কোনই সহায়তা করতে পারেনি। সত্যিকার অর্থে কবিতার সাথে কামিনীর যোগাযোগ থাকলেও কাঞ্চনের যোগ যে নেই তা জোর গলায়ই বলা যায়।
কবিতা বাদে অন্যান্য শিল্প মাধ্যম, যেমন গল্প/উপন্যাস, নাটাক, চিত্রকলা, চলচ্চিত্র ইত্যিদির বাজার মূল্য আছে। কিন্তু কবিতার কতোটুকু?
তবুও কবিরা কবিতা লিখবে, অতীতেও যেমনটি লিখতো। না দিক কবিতা কোন বিত্তের সন্ধান। সুখে, দুখে, আশা, নিরাশায় কবির বোধের ভেতরের বোধে যখন টোকা লাগবে কবিতা না লিখে কি কবি পারবে। সংসার গোল্লায় যাক, কবিরা তবুও কবিতা লেখবে। আর আমরা কবিতা প্রেমিরা আর্থিক নিশ্চয়তা না দিতে পারলেও ভালবাসায় জড়িয়ে রাখব কবিদের।
ঢাকা ।
সুচিন্তিত মতামত দিন