মৌ দাশগুপ্তা







চারটি মানুষের কথা






সনাতনের কথা ঃ

সময় খুব অলস মন্থর গতিতে চলছে আজকাল, কিছুতেই যেন সময়টা আর কাটতে চাইছে না এখানে। চোখ মেললেই সেই একঘেঁয়ে গাছের পাতা, হলদেটে সবজে ঘাস, দোতলা বাড়ীটার ছাদে ঝুঁকে আসা আমগাছ, সেই কাক শালিখ চড়াইয়ের কূটকাচালি। এখানে সবকিছু ঠিক আমার মতই বুড়ো হয়ে গেছে। কি আর করি। রোদে পিঠ দিয়ে বসে সকাল থেকে অনেকবার পড়া আজকের আনন্দবাজারটাই আবার মেলে ধরি চোখের সামনে। বাসি খবর। বুড়িয়ে যাওয়া খবর। ঘরে এমন কোন বই নেই যেটা পড়া হয়নি। নতুন কেনাও হয়নি বহুদিন, কেই বা যাবে কিনতে! আমার আর সেই পায়ের জোরটাই তো আজকাল টের পাই না। ঘরে কেউ নেই কথা বলার জন্য। টিভিটাও দেখা হয়না চোখ থেকে জল পড়ে বলে। তবে সারা দিনরাত মুড়ির টিনের মত ওটাই কানের কাছে বাজে। জানান দেয় যে আমি পুরোপুরি একা নই। তবে নিজের জন্য চা বানাতে হলে বড় একা লাগে,এইসময়টায় বড় ভবানীর কথা মনে হয় আমার।আমার বউ ভবানী। মাঝে মাঝে সিনেমার কাটা রিলের মতো ছোট ছোট দৃশ্য ফিরে আসে আমায় অলস মনের দেওয়ালে। ঠিক একই ঘর, একই বারান্দা, একই জানালা। তখনো সবকিছু বুড়িয়ে যায়নি। ও আপনমনে গান গাইছে গুনগুনিয়ে করে আর ছাঁকনি দিয়ে চা ঢালছে কাপে। আমি চায়ের কাপটা হাতে নিয়ে, ওর দিকে তাকিয়ে হাসলাম। ওর লাজেরাঙা মুখটা আরকটু মিষ্টি হয়ে উঠলো দুষ্টুমীর ঝিলিকে। কোমরে কাপড় জড়িয়ে উঁচু টুলের ওপর দাঁড়িয়ে ঝুল ঝাড়ছে,অতিরিক্ত পরিশ্রমে ফরসা মুখটা লাল হয়ে গেছে। এমন সময় কাঁথায় শোওয়া সনত কেঁদে উঠতেই তড়িঘড়ি নামতে গিয়ে হুড়মুড়িয়েপড়ে গেল। আমিতো ঘাবড়ে গেছি, কার দিকে যাবো? ছেলে না বৌ? সে সব দিনগুলো কত তাড়াতাড়ি যে ফুরিয়ে গে! ভবানী চলে যাবার পর প্রথম প্রথম আমার ভীষণ কষ্ট হতো,খুব কান্না পেতো যখন এই স্মৃতিগুলো মনে পড়তো। মাঝে মাঝে ভীষণ মন কেমন করা বিষণ্ণতায় কাঁদতে কাঁদতে ভেঙে পড়তাম। নিজেকে খুব অসহায় মানুষ মনে হতো। বাঁচার ইচ্ছেটাই চলে যাচ্ছিল। সনতটা না থাকলে হয়তো জীবনটা আমার আজ অন্য খাতেই বইত। শুধু ঐ মা মরা ছেলেটার মুখ চেয়েই আজো বেঁচে আছি। এখন তো আবার আসলের সুদটুকুও রয়েছে। আমার সন্তু। ভাবতে ভাবতে চায়ে চুমুক দিতেই মুখটা বিস্বাদ হয়ে গেল, চায়ে লিকার হয় নি ঠিকমতো। বিরক্ত হই নিজের ওপর। কিছুই তো জীবনভর ঠিকমত গুছিয়ে করে উঠতে পারলাম না। সনত তো দূর অস্ত, এখন অবসর জীবনে ঘরে বসে থেকেও মা মরা নতিটাকে মনের মত করে গড়ে তুলতে পারিনি।সন্তুর কথা ভাবলেই নিজেকে কেমন অপরাধী লাগে। ছেলের ঘরের একমাত্র নাতি আমার, বংশপ্রদীপ, আমার কত আদরের,কত প্রশ্রয়ের। এ তো সেদিনের ছেলেটা, সবে স্কুলের পাট চুকিয়েছে, কিন্তু এমন কাঠকাঠ বদরাগী ছেলেটা হয়ে যাচ্ছে যে ঠিক বুঝিও না যে ও ঠিক কি করে, কি পড়ে। কে জানে কোন বদসঙ্গে মিশছে নাকি আজকাল। সবাই বলে আমার অতি আদরেই নাকি বিগরাচ্ছে ছেলেটা, কেন যে এমন হল কে জানে! কেমন রোগা চোয়ারে টাইপের চেহারা হয়ে যাচ্ছে। কখনও একা গুম খেয়ে ঘরে বসে থাকে ঘন্টার পর ঘন্টা, কখনও কারনে অকারনে পাগলের মত হাসে, মুঠো মুঠো কি সব ওষুধ খাচ্ছে । জানতে চাইলে বলে মাথা ধরেছে, কি পেটে ব্যাথা হচ্ছে। কে জানে নেশা ভাং করছে কিনা। খবরের কাগজে তো পড়ি লোকে কাশির সিরাপে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে খেয়েও নাকি নেশা করছে আজকাল। সন্তুটা কেমন বেয়াদপ অসহিষ্ণু হয়ে যাচ্ছে দিনদিন। ইদানিং তো প্রশ্ন করলেই এমন চোখ পাকিয়ে তাকায় যে আর প্রশ্ন করি না। কিছু বলতে গেলেই চোখে-মুখের ভাবভঙ্গিতে বাঙ্ময় হয়ে যে নীরব উত্তরগুলো ভেসে ওঠে সেগুলো বুঝতে আমার বড় কষ্ট হয়। আসলে ঠিক যে সময়টায় বেঁচে আছি সেই সময়টার পৃথিবী খুব বেশি জটিল আমার পক্ষে বোঝার জন্য। তবু বোঝার চেষ্টা করি। সনতটাও বড় ব্যস্ত ওর ব্যবসা,ওর বন্ধুবান্ধব,ওর নিজের জীবন নিয়ে। বৌটা মরার পর থেকেই কেমন বারমুখো হয়ে গেছে ছেলেটা। তাও সময় সুযোগ পেলে বা ছেলেটা ঘরে থাকলে ওকে মনের ভয়টা জানানোর চেষ্টা করি, নাতিটার দিনদিন বিগড়ে যাওয়া আচরনটা নিয়ে কথা বলি,প্রশ্নের পর প্রশ্ন করতে থাকি আমার মনের দানা বেঁধে থাকা,সব সংশয়,সব সন্দেহ, সবকিছু নিয়ে। সনতও দেখি একটা সময়ের পর ধৈর্য হারিয়ে ফেলে। উঠে চলে যায় অন্য ঘরে। আসলে ও কেন যেন পুরো ব্যাপারটার মধ্যে কোন অভিযোগ করার কিছু খুঁজে পায় না। ও মেনেই নিয়েছে এই উঠতি বয়সের ব্যাপারটা এভাবেই চলতে থাকবে। কি হবে রাগারাগি করে? এরপর যদি রাগ করে ছেলেটা আরো বিগড়ে যায়? আমি বোকার মত একাই বসে থাকি। উঠে ওর পেছন পেছন যেতে ইচ্ছে করে - কিন্তু কেন জানি না বয়সের টান, কিংবা ছেলের সাথে এত বছরের পর বছর ধরে গড়ে তোলা দুরত্বের ফাঁকটা,নাকি নিজের আহত আত্মসম্মানবোধটাই আমায় শক্ত বেঁধে রাখে ।

সন্তুর কথা:
মাঝরাত থেকেই শুরু হয়েছে একটানা বৃষ্টি। দোতলা পৈত্রিক বাড়ীর ছাদের একটেরে চিলেকোঠার ঘরটা এখন আমার একার। শুনতে চিলেকোঠা হলেও বেশ বড় আর আরামদায়ক ঘরটা।কদিন আগে অবধি এ ঘরের অংশীদার ছিলো আমার কুকুর ভুলু আর টিয়া লালু। লালুকে উড়িয়ে দিয়েছি আর ভুলু নিজেই হারিয়ে গেছে। দরজা জানলা বন্ধ থাকলে এখানে থেকে বাইরের গাড়ির হর্ন , পথচলতি লোকের গলার স্বর, কি মাঠে খেলুড়ে বাচ্চাগুলোর চেঁচানি,ঝড়ের শোঁ-শোঁ শব্দ কি বৃষ্টির রিমঝিম কোনোটাই শুনতে পাওয়া যায়না। মানে শুনতে পাবার কথাও না । তবুও এই ঘুমহীন রাতে বৃষ্টিপড়ার একঘেঁয়ে আওয়াজটি অসহ্য লাগছে। একরকম জেদ করেই খোলা ছাদের সাথে লাগোয়া এই ঘরটা আমি বেছে নিয়েছি ,হয়ত মনের মাঝে এই স্বপ্ন বুনে রেখেছিলাম কোনো পথ ভুলে যাওয়া মেঘ কিংবা বৃন্ত খসা তারা আমার একাকী মনের অলিন্দে এই পথ ধরে এসেই হয়ত বাসা বাঁধবে। কিন্তু মানুষ ভাবে এক আর হয় আরেক। বেশ কয়েকদিন ধরেই মেজাজ একটু একটু করে খারাপ হওয়া শুরু হয়েছিলো। আসলে বায়োপ্সির ফাইনাল রিপোর্টটা হাতে পাবার পর থেকেই পাল্টে যাচ্ছিলাম। তুচ্ছ তুচ্ছ বিষয়ে যখন আমার পছন্দ – অপছন্দ কখনো সোচ্চারে গলা তুলে অথবা নিরুত্তরে কাঁধ ঝাকিয়ে, বা ভ্রু কুঁচকে বাড়ীর বাকি দুই সদস্যের কাছে প্রকাশ করছিলাম – তখন তাদের চাহনি দেখেই বুঝেছিলাম আমার বাহ্যিক পরিবর্তনটা একটু হলেও তাদের নজরে পড়েছে। এসব আসলে আমার অর্থহীন সুখের বিলাসিতা। আমি চাই, ওরা আমাকে ভুল বুঝুক, আমার থেকে দুরে সরে যাক, আমায় এত ভালো না বেসে ওরা ধীরে ধীরে আমায় ঘেণ্ণা করুক। আমায় ছেড়ে থাকতে অভ্যস্ত হয়ে যাক। তাই সব জেনে বুঝেও ওদের দুজনের অবাক হওয়া চাউনি, বা বাবার বিরক্তি সহকারে ধমক কি দাদুর অস্ফুট চাপা স্বরের ইনিয়ে বিনিয়ে খেদোক্তি শুনে আমি হাসি শুধু , শরীর কাঁপিয়ে হাসতে থাকি। হাসির দমকে চোখে জল চলে আসে। শুনেছিলাম, নাকি কোথায় যেন পড়েছিলাম যে, যে মানুষটা আত্মহত্যা করতে যায় সেও নাকি মরার আগে প্রাণপণে চেষ্টা করতে থাকে কোনভাবে বেঁচে যাওয়ার। সারাক্ষণ যে মরবো মরবো করে সেও অন্ধকারে নিজের ছায়া দেখে ভয়ে চমকে ওঠে। আর মৃত্যু যেখানে সব আয়োজন নিশ্চিত করছে সেখানে প্রতিটা দিন যদি নিজেই নিজের সাথে একটু রসিকতা,একটু নাটুকেপনা না করে যাই তবে জীবনটাকে শেষবিন্দু অবধি অনভব করবো কি করে? মরার পরে তো আমার হাতে কিছুই থাকবেনা। সত্যি বলতে কি, নিজেকে বড্ড ভালবাসি আমি।বেঁচে থাকতেও বড় ইচ্ছা করে । কতই বা বয়স আমার। কবি সুকান্তের মত একুশ মাত্র। খুব মায়া হয় আমার নিজের জন্য। আর এই মায়াময় অনুভবটাকে বুক পকেটে নিয়ে আমি মনোযোগ দেই কবিতার খাতায়, বইয়ের পাতায়। সব কিছু ভুলে ডুবে যেতে চাই ধীরে ধীরে। আমি খুব করে বিশ্বাস করতে চাই যে ক্যান্সার নামক কোনো অসুখ আমার নেই । বাড়ীর লোক বলতে খালি বাবা আর দাদু। কাকে কি বলবো ? দুজনেই তো আমায় নিয়ে স্বপ্ন দেখেই বেঁচে আছে,এই কারনে ডাক্তারের দেয়া ওরাল থেরাপি নেই , ওষুধ খাই,পথ্য খাই , মন ভালো করতে সফট মিউজিক শুনি,কবিতা লিখি,বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিই,স্ল্যাং কথা বলি,বটতলার বই পড়ি,মুভি দেখি,নেশাও করি।। আর এ সবই করছি নিজেকে মৃত্যু চিন্তা থেকে দূরে রাখতে। কে চায় সেধে ব্যথার সাগরে হারিয়ে হতে , কে চায় তারুণ্যর শুরুতেই, জীবনের প্রারম্ভেই আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে কেমোথেরাপি নেয়া নিজের চেহারার ঔজ্জ্বল্যতা হারানো দেখতে !রোজ একটু একটু করে মরে যেতে!

সনতের কথা:
সন্তুটা কোমায় রয়েছে আজ নিয়ে ঠিক পাঁচদিন। ছেলেটা সব জানতো, তবু সব লুকিয়ে গেছে আমাদের থেকে,কষ্ট পাবো বলে কি? এখন কি আর কম কষ্ট হচ্ছে আমাদের? কেন যে এতদিন ছেলেটার দিকে নজর দিই নি, কেন শুনেও শুনিনি বাবা কি বলতে চাইছে, একটু যদি আমি ঘরের দিকে নজর দিতাম, হয়তো এমনটা হতো না, হয়তো আমার পৃথিবীটা এভাবে শূণ্য হয়ে যেত না। হয়তো …. ।
এ দিনগুলোর মধ্যে প্রায় প্রতিদিনই আমার বাবা সন্তু কে দেখতে গিয়ে হাসপাতালে ঝরঝর করে কাঁদতো। আমিও কাঁদতাম তবে, নিঃশব্দে। আমার বাবা কাঁদতো তেত্রিশ কোটি দেবতাদের কাছে দয়া ভিক্ষা করে, যেন তার নাতি সুস্থ হয়ে ওঠে, যমরাজ যেন আধফোটা কুঁড়ির বদলে শেষ বিকালের বাসি ফুলেই তুষ্ট হয়। ছেলেটা যেন তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে যায় আর আমি কাঁদতাম একটা আতঙ্কে, একটা ভয়ে। কারণ আমি জানতাম সন্তুর বেঁচে থাকার সম্ভাবনা অতিক্ষীণ, যদি কোন মিরাকেল হয় তবেই শুধু সম্ভব। আমি মন থেকে চাইতাম যেন কোন মিরাকেল হয় কিন্তু আমার মস্তিষ্ক সব সময় ভয়ে ভয়ে থাকতো। কারণ আমি যে এ ঘটনা আগেও দেখেছি। কিশোরবয়সেই এভাবে আমায় একলা ফেলে হারিয়ে গেছিল আমার মা, তারপরে সন্তুর মা, ঐন্দ্রিলাও তো এভাবেই হারিয়ে গেছে আমার জীবন থেকে, একরত্তি ছেলেটাকে আমার কোলে ফেলে। মন যাই বলুক না কেন, হৃদয় যাই ভাবুক না কেন, আমার মস্তিষ্ক বুঝে গিয়েছিলো যে ফুলের পাপড়ি ঝরে যেতে শুরু করেছে তার কুঁড়ি হয়ে টিকে থাকাটা ততটাই অসম্ভব, যতটা অসম্ভব আবার আগের মত আমার আদরের ছেলেটাকে ফিরে পাওয়া। আমি স্বার্থপরের তো শুধু নিজের কথা ভাবছিনা, কেননা তার আগে যে বাবার কথাটাই মনে হচ্ছে। আমার বাবা কি এই বয়সে এই শোকটা সামলাতে পারবে ? বাবার দিকে চেয়ে যে আমায় শক্ত থাকতে হবে। “ক্লিনিক্যালি ডেড” এই শব্দটার শোনার পর থেকেই আশে পাশের, দূরের, চেনা অচেনা, সব মন্দির, মসজিদ, গির্জায়, পীরের দরগায়, মাজারে, দেবতাদের থানে, গুরদোয়ারায় আমি প্রাণপনে জোড়হাতে আমার ছেলেটার নামে প্রার্থনা করে গেছি, সম্ভব অসম্ভব সব রকমের মানত করে গেছি। আর চেনা পরিচিত,বন্ধুবান্ধব,অফিসের কলিগ সব ধর্মের মানুষের কাছে বিনতি করে গেছি তারা যেন আমার মৃতু্যপথগামী ছেলেটার আরো কটা দিনের বর্ধিত আয়ূর জন্য একটু প্রার্থনা করেন। হাসপাতালের বিছানায় থাক, কি কোমাতেই থাক, আমার ছেলেটা তো আরো কটা দিন আমার চোখের সামনে থাকুক। শ্বাস নিক, বেঁচে থাকুক, আরোও কটা দিন...

লেখকের কথা: 
গত কাল, মানে এই সোমবার, আমাদের পাশের বাড়ীর সনতকাকুর ছেলে সন্তু আমাদের সবাইকে ছেড়ে চলে গেলো। সেদিনও আকাশে রোদ উঠেছিলো, শীত শুরুর রোদ ঝকঝকে নীল আকাশে ছিঁটেফোঁটা মেঘও ছিলো না, ওদের বাড়ির সামনের আম গাছটায় রোজকার মত কিছু কাক-শালিক ডাকছিলো। রাস্তার জমা ধূলোর ওপর নেচে বেড়াচ্ছিল চড়াইয়ের ঝাঁক। ওদের ছাদের টবে জলের অভাবে মৃতপ্রায় জবা গাছটাতেও ফুল ধরেছিল। হাসতে হাসতে বাড়ীর সামনে দিয়ে কলকলিয়ে রোজকার মত স্কুল গেছিল সেই মেয়েগুলো, কদিন আগেও যাদের হাসি হয়তো বুকে কাঁপন ধরাতো সন্তু বলে সদ্যপ্রয়াত একটা ছেলের। পৃথিবীটা একই রকম ছিল। কেউ কি কোথাও বসে ভাবছিলো যে কোথায় চলে গেল ছেলেটা? আচ্ছা, ও কী খুব একা? ওর কী খুব ভয় করছে? কে জানে! শুধু ওর সেই একা থাকার, একা হয়ে যাবার গা ছমছমে অনুভবটুকু সম্বল করে আমি এক সামান্য গল্প লিখিয়ে কারো চলে যাওয়ার কথা লিখতে বসেছি। আমি হারিয়ে যাওয়া এক কিশোরের কথা লিখতে বসেছি। যে কিনা মানুষ হতে চেয়েছিল, বড় হতে চেয়েছিলো......ঠিক তোমার মত কিম্বা হয়তো আমার মত......

কলকাতা ।


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

1 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

সুচিন্তিত মতামত দিন